পাট জাগ দিতে পুকুর ভাড়া, এক বিঘায় ২০০০ টাকা!
আমানুল হক আমান, বাঘা (রাজশাহী)
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৩, ০৭:১৮ পিএম
এলাকায় বৃষ্টি নেই। পাটের ফলন ভালো হলেও পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না কৃষকরা। আর এজন্য পাট জাগ দিতে কৃষকদের পুকুর ভাড়া করতে হচ্ছে।
রাজশাহীর বাঘায় এক বিঘা জমির পাট জাগ দিলে পুকুর মালিককে দিতে হচ্ছে ২ হাজার টাকা। এলাকায় বৃষ্টি নেই। পুকুর মালিক শ্যালোমেশিন দিয়ে পানি জমিয়ে রেখে পুকুর প্রস্তুত করে রেখেছেন। সেই পুকুরে এলাকার চাষিরা পাট জাগ দিচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৩ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। পাট চাষে মোটামুটি অনুকূল আবহাওয়া ছিল। বর্তমানে পাট কাটা, জাগ দেয়া, আঁশ ছুড়ানো এবং শুকানোর কাজ করছেন চাষিরা। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ইতোমধ্যে নতুন পাট উঠতে শুরু করেছে।
হামিদকুড়া গ্রামের পাট চাষি হাবিবুর রহমান বলেন, আমার দুই বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছিলাম। বৃষ্টি না থাকায় পাট জাগ দিতে পারছিলাম না। পাট কাটার পর জানতে পারলাম বেলাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি নিজের শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি দিয়ে পাট জাগ দেওয়ার জন্য পুকুর প্রস্তুত করে রেখেছেন। ৪ হাজার টাকায় দুই বিঘা জমির পাট জাগ দিয়েছি। আমার মতো অনেকেই ওই পুকুরে পাট জাগ দিয়েছেন।
জোতরঘু গ্রামের পুকুর মালিক বেলাল হোসেন বলেন, এলাকায় অনেক দিন থেকে বৃষ্টি নেই। আগের একটু পানি ছিল, এতে এসে পাট জাগ দিতে চাচ্ছিলেন চাষিরা। আমি চিন্তা করে দেখলাম, আমার শ্যালোমেশিন আছে, ওই মেশিন দিয়ে পুকুরে পানি দিয়ে প্রস্তুত করি। তারপর চাষিদের একটি শর্তে পাট জাত দিতে অনুমতি দিয়েছি।
উপজেলার দিঘা হাটে পাট বিক্রি করতে আসেন দিঘা গ্রামের মকুল হোসেন বলেন, এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে লাঙ্গল, বীজ সেচ, কাটা, পরিষ্কার করা, সারসহ যাবতীয় খরচ হয় ১০-১২ হাজার টাকা। উৎপাদন হচ্ছে ১০-১২ মণ। বিক্রি হচ্ছে ১৮-২০ হাজার টাকায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, এবার বৃষ্টি না থাকায় অনেক পাট চাষি পুকুর ভাড়া নিয়ে আবার কেউ কেউ বিঘাপ্রতি পুকুরে পাট জাগ দিচ্ছেন। এতে চাষিদের খরচ কিছুটা বেশি হচ্ছে। কোনো উপায় নেই। আবাদ করলে একটু খরচ করতে হয়। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ইতোমধ্যে নতুন পাট উঠতে শুরু করেছে।