ফ্ল্যাটে বসে আসল হেরোইনকে করা হতো দ্বিগুণ
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৩, ১১:০৩ পিএম
কেরানীগঞ্জের দুটি ফ্ল্যাট বাসায় অভিযান চালিয়ে প্রায় দুই কোটি টাকা মূল্যের ২ কেজি ১০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে ৬ জনকে। ওই দুই ফ্ল্যাটে বসে আসল হেরোইনকে দ্বিগুণ করা হতো বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন আরশিনগর লেক সিটি এলাকার এসডি মহল নামে আবাসিক ভবনের চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটে ও আটিবাজারের সুজন হাউজিংয়ের ১০ নাম্বার রোডের সি-ব্লকের আবাসিক ভবনের নিচতলার ওই ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় পুলিশ।
কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবির জানান, মঙ্গলবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আটিবাজার ইউসিভি ব্যাংকের সামনে থেকে মো. আলী ও মো. হাবিবুল ইসলাম রানার হাতে দুটি সন্দেহজনক আটার প্যাকেট তল্লাশিকালে দেখা যায়, দুটি প্যাকেটের মধ্যে পৃথকভাবে ৫০০ পুড়িয়া করে ১০০০ পুড়িয়া (১০০ গ্রাম) হেরোইন রয়েছে। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তারা ফ্ল্যাট বাসার বিষয়টি পুলিশের কাছে ফাঁস করে দেয়।
এরপর আরশিনগরের লেক সিটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসডি মহলের ৪র্থ তলায় ফ্ল্যাট থেকে ফয়েল পেপারের ৯৮টি বান্ডিল পাওয়া যায়। এগুলোতে মুড়িয়ে হেরোইনের পুরিয়া বানানো হয়। বিভিন্ন ব্যান্ড এর আটা-ময়দা, হলুদের গুঁড়া, মরিচের গুঁড়ার ১০০০টি খালি প্যাকেট পাওয়া যায়। মূলত এসব খালি প্যাকেটের মধ্যে হেরোইনের পুরিয়াগুলো ঢুকিয়ে ইলেকট্রিক মেশিন দ্বারা মুখ আটকিয়ে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে অভিনব কায়দায় সুকৌশলে ডিএমপির বিভিন্ন এলাকায় বাজারজাত করা হয়।
ওই ফ্ল্যাট থেকে হেরোইন প্রস্তুত ও প্যাকেজিংয়ের সঙ্গে জড়িত হেলাল ও বিপ্লবকে প্রায় ১ কেজি হেরোইনসহ গ্রেফতার করা হয়। এছাড়াও সেখান থেকে হেরোইন প্রস্তুতের বিভিন্ন কম্পোজিশন ব্লেন্ডিং করার জন্য ব্লেন্ডিং মেশিন, ইলেকট্রিক প্যাকিং মেশিন, ওজন মাপার ডিজিটাল মেশিন, হেরোইনের বিভিন্ন কেমিক্যালসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়।
এরপর আটিবাজারের সুজন হাউজিংয়ের ১০ নাম্বার রোডের সি-ব্লকের ভাড়া বাসার নিচতলায় ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে বিল্লাল ও শরীফুলকে গ্রেফতার ও প্রায় ১ কেজি হেরোইন উদ্ধার করা হয়।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ জানান, গ্রেফতারকৃতরা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসল হেরোইন সংগ্রহ করে ভাড়া নেওয়া ফ্ল্যাটে বসে বিভিন্ন কেমিক্যাল মিশিয়ে আসল হেরোইন দ্বিগুণ করত। এরপর পুড়িয়া বানিয়ে আটা-মসলার খালি প্যাকেটে ঢুকিয়ে মুখ এমনভাবে আটকে দিত; দেখলে মনে হতো প্যাকেটটি কখনো ছেঁড়া হয়নি। যাতে সহজেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিতে পারে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।