সাপের কামড়ে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু, চিকিৎসকের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ
নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৩, ১০:১২ পিএম
নিয়ামতপুরে সাপের কামড়ে প্রাণ গেল ১৩ বছর বয়সি স্কুলছাত্রী তাসকেয়া তৃষার। তৃষার এ মৃত্যুতে ডাক্তারের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। রোববার দিবাগত রাতে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে।
তাদের অভিযোগ, চিকিৎসার অভাবেই তৃষার মৃত্যু হয়েছে। অ্যান্টিভেনম থাকতেও তাকে দেওয়া হয়নি চিকিৎসা। বরং চিকিৎসা না দিয়ে কালক্ষেপণ করে শেষমুহূর্তে তাকে রাজশাহী পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, তৃষাকে রোববার দিবাগত রাতে বিষাক্ত সাপ কামড় দিলে পরিবারের সদস্যরা মরা সাপসহ তাকে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. লিংকন অ্যান্টিভেনম রয়েছে এবং এর চিকিৎসাও রয়েছে বলে শিশুটিকে ভর্তি করান স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। এরপর কেটে যায় প্রায় দুই ঘণ্টা। ধীরে ধীরে শিশুটি অবনতির দিকে যেতে থাকলে এক র্যায়ে চিকিৎসক ডা. লিংকন জানান, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অ্যান্টিভেনম নেই। পরে ওই শিশুটিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভোর ৫টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
মৃত তৃষা উপজেলার পাঁড়ইল ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের তরিকুলের মেয়ে। সে গাংগোর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তৃষার এ মৃত্যুতে এলাকাবাসীসহ তার সহপাঠী ও স্কুলপাড়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তৃষার পরিবারের সদস্যরা জানান, রোববার দিবাগত রাতে বাড়ির বারান্দায় বাবা-মায়ের সঙ্গে শুয়ে ছিল তৃষা। রাত প্রায় ১টার দিকে সাপে কামড় দিলে কান্নাকাটি শুরু করে তৃষা। তার কান্নায় বাবা-মা ঘুম থেকে উঠে দেখে একটি বড় (চিতাবড়া) সাপ বিছানায়। পরক্ষণে পরিবারের সদস্যরা মিলে মারেন সাপটিকে। মরা সাপসহ রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তৃষাকে নিয়ে গেলে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. লিংকন তাদের অভয় দেন। এরপর ভর্তি করা হয় তৃষাকে।
তৃষার চাচা শরিফুল ইসলাম বলেন, ডাক্তারের অবহেলার কারণে তৃষার মৃত্যু হয়েছে। অ্যান্টিভেনম নেই জানালে প্রথমেই আমরা তৃষাকে রাজশাহী মেডিকেলে নিতে পারতাম। দুই ঘণ্টা ভর্তি রেখে বিলম্ব করার কারণেই তৃষার মৃত্যু হয়েছে।
আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. লিংকন বলেন, তারা সাপসহ রোগী আনলেও প্রাথমিক লক্ষণে সেটি বুঝতে সমস্যা হচ্ছিল। পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেখানে অ্যান্টিভেনম রাখা হয় সেখানে গিয়ে দেখি অ্যান্টিভেনম নেই। অ্যান্টিভেনম খুঁজে না পাওয়ায় রাজশাহী মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহববুল আলম বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিভেনম রয়েছে। তিনি (ডা. লিংকন) কারো সঙ্গে যোগাযোগ না করেই অ্যান্টিভেনম নেই- এ কথা কিভাবে বললেন তা বোধগম্য হচ্ছে না। তবে এ ঘটনার দায় তাকেই নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় তার (ডা. লিংকন) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।