
প্রিন্ট: ০১ মার্চ ২০২৫, ০২:২০ পিএম
কাঁচপুরে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৪০

যুগান্তর প্রতিবেদন, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ)
প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৩, ১০:৫৫ পিএম

আরও পড়ুন
সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুরে বিএনপির পদযাত্রায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ, পালটাপালটি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ এ সময় লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
শনিবার বিকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে ১৭ জন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনার পর কাঁচপুর এলাকাজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় পুলিশ কোনো নেতাকর্মীকে আটক করতে পারেনি।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবির কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার বিকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর পয়েন্টে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, সোনারগাঁ থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, কেন্দ্রীয় কমিটির সহআর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, নির্বাহী সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, রিফাত ও ইকবাল কাউন্সিলরের নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা লাঠি নিয়ে পদযাত্রা কর্মসূচিতে অংশ নেন।
এ সময় নেতাকর্মীরা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ও সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশ এসে নেতাকর্মীদের রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করে। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের তর্ক হয়। একপর্যায়ে পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ শুরু করলে নেতাকর্মীরা রাস্তা থেকে সরে যান। পরে তারা আবার লাঠি নিয়ে জড়ো হয়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের শুরু হয় পালটাপালটি ধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা। এ সময় উত্তেজিত নেতাকর্মীরা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। পুলিশ এ সময় টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেটে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও সোনারগাঁ থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, কেন্দ্রীয় কমিটির সহআর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম সজিব, সোনারগাঁ থানা যুবদল নেতা আল আমিন মোল্লা, মোখলেছুর রহমান, জাসাসের সভাপতি আমির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মিয়া, বিএনপি নেতা গিয়াসউদ্দিন, শাহনুর, রিয়াজুল ইসলাম, মো. রিপন, আলী নূর, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক রাতুল হাসান, ছাত্রদল নেতা আরিফুল ইসলাম রাজ, তারাবো ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মন্টু সিকদার, আড়াইহাজার থানার যুবদল নেতা মনির হোসেন, জুয়েল মিয়া গুলিবিদ্ধ হন। এ ছাড়াও আহত হন ছাত্রদল নেতা রায়হান, হৃদয়, আক্তার হোসেন, আকাশ মাহমুদ, রিফাত আহমেদ বাবু, রনি, সাইদুল ইসলাম, তৈয়ব আলম, আলমগীর হোসেন, মনোয়ার হোসেনসহ ২৩ জন নেতাকর্মী।
এদিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের নৈরাজ্য ঠেকাতে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু ও সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দারের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা লাঠি নিয়ে শনিবার বিকালে কাঁচপুর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এ সময় যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন জানান, বিএনপির নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তার অবস্থান নিলে পুলিশ এসে অতর্কিতভাবে লাঠিচার্জ করেছে। পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর টিয়ারশেল ও গুলি ছুড়েছে। এতে আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাই মারমা বলেন, অনুমতি ছাড়াই মহাসড়কের কাঁচপুরে জেলা বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচি করতে চেয়েছিল। আমরা তাদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরে যেতে বললে তারা আমাদের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। আত্মরক্ষার্থে আমরা ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেই। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। পরবর্তী বিশৃঙ্খলা এড়াতে কাঁচপুর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।