Logo
Logo
×

সারাদেশ

টঙ্গী-মিরের বাজার সড়ক খানাখন্দে ভরা, জনদুর্ভোগ চরমে

Icon

লুৎফুজ্জামান লিটন, টঙ্গী পূর্ব (গাজীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৩, ০৩:২৬ পিএম

টঙ্গী-মিরের বাজার সড়ক খানাখন্দে ভরা, জনদুর্ভোগ চরমে

টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে মিরেরবাজার সড়কে টিএন্ডটি বাজার এলাকায় খানাখন্দে ভরা। ছবি: যুগান্তর 

গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে মিরেরবাজার সড়কের বিভিন্নস্থানে বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দের কারণে জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। কয়েক বছর ধরে এ অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির সংস্কার কাজ না হওয়ায় এসব খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এখন বৃষ্টির মৌসুম হওয়ায় দুর্ভোগ দ্বিগুণ হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়ক তলিয়ে যাচ্ছে। এতে যাত্রীবাহী পরিবহণ খানাখন্দে পড়ে প্রায়ই উল্টে যাচ্ছে। পূবাইল-মিরেরবাজার থেকে টঙ্গী যাওয়ার একমাত্র পথ হওয়ায় দুর্ঘটনার চরম ভীতি নিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে জনসাধারণকে।

পথচারী, যাত্রী সাধারণ ও স্থানীয়রা জানান, ঢাকা থেকে সিলেট-সুনামগঞ্জ-মৌলভীবাজার-হবিগঞ্জ-ভৈরব-নরসিংদীসহ বিভিন্নস্থানে যাওয়া এবং আসার প্রধান সড়ক টঙ্গীর স্টেশনরোড-নিমতলি-মিরেরবাজার। সড়কটি এই এলাকার একটি ব্যস্ততম সড়ক। এ সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার যাত্রী আসা-যাওয়া করেন। শুধু নিমতলি থেকে টঙ্গী পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়কে অন্তত ১০টি স্থানে খানাখন্দ রয়েছে। এরমধ্যে নিমতলি রেললাইন সংলগ্নস্থান, কে-টু ফ্যাক্টরি, হাতিম গ্রুপের কারখানার সামনে, টিন্ডটি বাজার জাতীয় পার্টির অফিসের সামনে, আমতলি জাবান হোটেলের সামনে, শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতুর পশ্চিম দিকের ঢালে সমবায় কমপ্লেক্সের সামনে বড় বড় গর্ত থাকায় প্রায়ই যাত্রীবাহী ও মালবাহী গাড়ি আটকে যায়। 

এছাড়া প্রায়ই বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বহনকারী লেগুনা, ইজিবাইক, অটোরিকশা উল্টে গিয়ে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে অহরহ। টঙ্গী নিমতলি থেকে স্টেশনরোড পর্যন্ত সড়কে খানাখন্দের কারনে অত্যন্ত ধীরগতিতে গাড়ি চলতে হচ্ছে। এতে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও অফিস-আদালতগামী যাত্রীরা সময়মতো তাদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পারছেন না। ফলে চাকরিজীবীদের নষ্ট হচ্ছে কর্মঘণ্টা এবং শিক্ষার্থীরা সময়মতো ক্লাসে উপস্থিত হতে না পেরে পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটছে।

তিন কিলোমিটার সড়কে ১০মিনিটে গন্তব্যে যাওয়ারি কথা। ভাঙাচোরা সড়ক হওয়ায় গাড়ির ধীরগতির কারণে ১ ঘণ্টায়ও গন্তব্যে যেতে পারেন না বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রসা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অফিসগামীরা। এছাড়া কালীগঞ্জ, পূবাইল, ভাদুন, হায়দরাবাদ, মিরেরবাজার, মাজুখান ও নিমতলিসহ আশপাশের গ্রামগুলো কৃষিসমৃদ্ধ হওয়ায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহণে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে খানাখন্দে ভরা এই সড়কের কারণে।

উত্তরা হাইস্কুল এন্ড কলেজে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী তামান্না আক্তারকে নিয়ে প্রতিদিন কলেজে যান তার মা কামরুন্নাহার। তিনি যুগান্তরকে জানান, টঙ্গী স্টেশন রোড-মিরেরবাজার সড়কে টিএন্ডটি আমতলি এলাকায় বড় বড় গর্ত থাকায় চালকদের খুব সাবধানে চলাচল করতে হয়। এ কারণে প্রায়ই যানজট লেগে যায়। ক্লাস শুরুর অন্তত এক-দেড়ঘণ্টা আগে মেয়েকে নিয়ে বাসা থেকে রওনা দিতে হয়। এসড়ক দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটে চলাও এখন কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

পূবাইলের মাজুখান থেকে খিলক্ষেতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আশিকুর রহমান। তিনি জানান, এই সড়কটির বেহাল দশার কারণে যানজট নিত্যসঙ্গী। একদিনও সময়মতো অফিসে যেতে পারি না। অফিসে যেতে দেরি হওয়ায় প্রায়ই আমাকে বসদের তিরস্কারমূলক কথা শুনতে হয়। 

এনা বাসের চালক মো. মুসলেম উদ্দিন বলেন, ঢাকা থেকে সিলেটের সুনামগঞ্জে নিয়মিত যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করি। সড়কে খানাখন্দের কারণে ১০মিনিটের রাস্তা পাড়ি দিতে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় লেগে যায়। যার কারণে যাত্রীরা প্রায়ই আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। 

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে গাজীপুর সিটির ৪৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাদেক আলী বলেন, এই সড়কের আমতলি, টিএন্ডটি বাজার, নিমতলিসহ বিভিন্নস্থানে খানাখন্দে ভরে গেছে। সড়কটি সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন নয়, এটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের। তাই এখানে আমাদের কিছু করার নাই। সড়কটি সংস্কার করার জন্য সড়ক বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একাধিকবার জানিয়েছি। 

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে টঙ্গী সড়ক উপ-বিভাগের প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম মোল্লা বলেন, নিমতলি থেকে স্টেশনরোড পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে  টিএন্ডটি বাজার এলাকায় দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সড়কে সিসি ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে বৃষ্টির জন্য কাজ বন্ধ রয়েছে। এছাড়া সড়কের কিছু কিছু জায়গায় প্রশস্ত করার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া টিএন্ডটি বাজার জাতীয় পার্টির অফিস সংলগ্ন এলাকা থেকে নিমতলি রেললাইন পর্যন্ত সড়কের কিছু কিছু জায়গা ব্যক্তি মালিকানাধীন হওয়ায় অধিগ্রহণ সংক্রান্ত ঝামেলা রয়েছে। এটি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল মহোদয়ের নির্বাচনি এলাকা হওয়ায় বিষয়টি তাকে জানানো হয়েছে। ব্যাপারটি তিনি দেখছেন। বৃষ্টি কমলে ফের এই সড়কের সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। 


 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম