বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধ, সংঘর্ষে আহত ১০
যুগান্তর প্রতিবেদন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৩, ১০:৫৫ পিএম
আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার দুই দিন পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে চরম বিরোধ দেখা দিয়েছে।
এর জের ধরে শনিবার বিকালে পৃথক কর্মসূচি পালনকালে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়।
জানা যায়, গত ১০ আগস্ট বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।
এরপর থেকেই জেলা বিএনপির একটি বিরাট অংশের নেতাকর্মীরা ঘোষিত কমিটিকে ফরমায়েশি কমিটি আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবি জানিয়ে শুক্রবার বিকালে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এরই জের ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
শনিবার বিকালে নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম পৌর এলাকার শেখ হাসিনা সড়ক সেতু এলাকায় একটি আনন্দ র্যালি বের করে।
অন্যদিকে একই সময়ে জেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি এবং নবগঠিত আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকনের নেতৃত্বে পাওয়ার হাউস রোডে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর ৫৪তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও কেক কাটার আয়োজন করে।
আনন্দ র্যালি বের হয়ে কিছু দূর যাওয়ার পর উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া। মুহূর্তের মধ্যে ওই এলাকার ব্যবসায়ীরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে চলে যায়। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। এসময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১ জনকে আটক করে।
জেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম জানান, আনন্দ র্যালি শেষ করে আমি ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। পরে সংঘর্ষ হয়েছে তা শুনতে পেয়েছি।
জেলা বিএনপির নবগঠিত আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি বলেন, এমন ব্যক্তিকে আহ্বায়ক করা রাজনৈতিকভাবে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা বিব্রতকর। এ কমিটি বাতিল করে নতুন করে ত্যাগী নেতাকর্মীদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হোক। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়েছে বলে জানতে পেরেছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসলাম হোসাইন জানান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। বিকালে এক পক্ষ আনন্দ র্যালি বের করে এবং অন্যপক্ষ কোকোর জন্মদিন পালনের কথা বললেও মূলত আনন্দ মিছিলকে প্রতিহত করার জন্য মাঠে নামে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং একজনকে আটক করে।