পানিতে ডুবল নিপা পালিতের পরিবারের স্বপ্ন!
হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৩, ০৬:১০ পিএম
স্বপ্ন ছিল নিপা পালিত (২৪) লেখাপড়া শেষ করে একটা চাকরি জোগাড় করে হতদরিদ্র পরিবারের হাল ধরবেন। পরিবারের এ স্বপ্নপূরণে বুকভরা আশা নিয়ে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার গণ্ডি পার করে ডিগ্রি (পাশ) কোর্সে ভর্তি হয়ে ঠিকভাবে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন নিপা।
কিন্তু ভাগ্যের একি নির্মম পরিহাস, পরীক্ষায় অংশ নিতে ঘর থেকে বের হয়ে পানিতে পড়ে তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এতে নিপা ও তার পরিবারের লালিত স্বপ্ন নিমিষেই চুরমার হয়ে গেছে। এমনটাই বলে বিলাপ করছিলেন গর্ভধারিণী মা পান্না পালিত।
সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ইসলামী হাটসংলগ্ন বাদামতল এলাকার পশ্চিমে চসিক ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের উত্তর ফতেয়াবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বৃষ্টির পানিতে পড়ে মারা যাওয়া নিপা পালিত ওই এলাকার উত্তম পালিতের মেয়ে। তিনি তিন বোনের মধ্যে সবার বড়। নিপা হাটহাজারী সরকারি কলেজের ডিগ্রি (পাশ) বিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন মৃত নিপার ঠাকুর দাদা (পিতামহ) বাদল পালিত। তিনি জানান, নিপা দীর্ঘদিন ধরে মৃগী রোগে ভুগছিল। সোমবার ডিগ্রি ২য় বর্ষের ব্যবস্থাপনা চতুর্থপত্র বিষয়ে পরীক্ষা ছিল। সকালে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় বসতঘরের অদূরে হঠাৎ মাথা ঘুরে বৃষ্টির পানিতে ডুবে থাকা নালায় পড়ে গেলে আর উপরে উঠতে পারেনি। এরপর স্থানীয় লোকজন দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার ডা. মাহাফুজুর রহমান খান তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিপা পালিতের ফুফাতো ভাই জয় ঘোষ জানান, হতদরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া নিপা বহু কষ্টে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছিল। তার স্বপ্ন ছিল পড়াশুনা শেষ করে হতদরিদ্র পরিবারের হাল ধরা কিন্তু তার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল।
এদিকে ট্রিপল নাইনে ফোন পেয়ে হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিপার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে থানা পুলিশ।
হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান বলেন, পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় বসতঘরের অদূরে বৃষ্টির পানিতে ডুবে নিপার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আমরা একটি অপমৃত্যু মামলা নিয়েছি এবং ময়নাতদন্তের পর মরদেহটি চমেক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।