Logo
Logo
×

সারাদেশ

চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা

Icon

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২৩, ০৯:০৩ পিএম

চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা

চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে নগরীর নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত এই বৃষ্টিপাত হয়। এতে মূল সড়কের পাশাপাশি অলিগলিতেও জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনেও হাঁটুপানি হয়। এদিন আবহাওয়া অফিস থেকে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে ভারি বর্ষণের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। 

এ সময় ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। এদিকে টানা বৃষ্টিতে নগরীতে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। টাইগারপাস এলাকায় পাহাড় ধসে একটি চলন্ত মাইক্রোবাস সড়কে আটকে যায়। পরে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা মাটি সরিয়ে মাইক্রোটি উদ্ধার করেন। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। 

বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে নগরীর হালিশহর, আগ্রাবাদ সিডিএ ও শান্তিবাগ আবাসিক এলাকা, ছোটপোল, বহদ্দারহাট, বাদুরতলা, শুলকবহর, মোহাম্মদপুর, কাপাসগোলা, চকবাজার, বাকলিয়ার বিভিন্ন এলাকা, ফিরিঙ্গিবাজারের একাংশ, কাতালগঞ্জ, কেবি আমান আলী রোড, চান্দগাঁওয়ের শমসের পাড়া, ফরিদার পাড়া, পাঠাইন্যাগোদা, মুন্সীপুকুর পাড়, তিন পুলের মাথা, রিয়াজউদ্দিন বাজার, মুরাদপুরের বিভিন্ন এলাকার সড়ক ও অলিগলি পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বর্ষার শেষভাগে এসে চট্টগ্রামে এই বৃষ্টিপাত হয়। দুদিনের টানা বর্ষণে নগরীর বিভিন্ন এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। ড্রেনের পানি সড়কে উঠে আসে। নোংরা পানি নিচু এলাকার বাসাবাড়িতেও ঢুকে পড়ে। পানি ওঠায় নিচু এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছে। নগরীর চেরাগি পাহাড়সংলগ্ন নিচু আবাসিক এলাকা শরীফ কলোনিতে প্রায় বুকসমান পানি উঠে। চকবাজার ও রিয়াজউদ্দিন বাজারে কাঁচাবাজারের দোকানপাট পানিতে তলিয়ে যায়। এছাড়া চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে ভোগ্যপণ্যের দোকান-আড়তেও পানি ঢুকে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

ভারি বর্ষণে নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় অবস্থিত চসিক মেয়রের বাসভবন চত্বরে হাঁটুপানি জমে। পানির মধ্যেই ছিল মেয়রের ব্যবহৃত চসিকের গাড়িটি। নগরীর অধিকাংশ মানুষের মতো এদিন মেয়র নিজেও পানিবন্দি ছিলেন। দুপুরের পর মেয়রের বাড়ির জলাবদ্ধতার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বেশকিছু ছবিতে দেখা যায়, বাড়ির লোকজন ও নিরাপত্তারক্ষীরা হাঁটুপানি মাড়িয়ে হাঁটাচলা করছেন। এসব পোস্টে সাধারণ মানুষ তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। 

চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ও মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাশেম বলেন, টানা বৃষ্টিতে মেয়রের বাসায় পানি উঠে গেছে। উনি বাসায় থেকে বিভিন্ন এলাকার পানি দ্রুত অপসারণের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করছি।

এদিকে ভারি বর্ষণে নগরীর টাইগারপাস এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। সকালে নগরীর দেওয়ানহাট থেকে একটি মাইক্রোবাস যাচ্ছিল কালুরঘাটের দিকে। টাইগারপাস আসতেই পাহাড়ের একাংশ ধসে পড়ে চলন্ত গাড়িটি আটকে যায়। তবে এতে কেউ হতাহত হননি। ধসে পড়া মাটি পাহাড়সংলগ্ন ফুটপাত ছাড়িয়ে মূল সড়কে এসে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও চসিকের কর্মীরা মাটি সরানোর কাজে যোগ দেয়। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সড়ক থেকে মাটি সরিয়ে নেওয়ার পর যান চলাচল শুরু হয়। 

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্র জানায়, সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে পাহাড় ধসের খবর পেয়ে আগ্রাবাদ থেকে দুটি টিম সেখানে যায়। পাহাড় ধসে মাটি পড়ে একটি মাইক্রোবাস আটকে পড়ে সড়কে। পরে মাইক্রোবাসটিকে সড়কের একপাশে সরিয়ে নেওয়া হয়। 

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা সুমন সাহা যুগান্তরকে বলেন, আমবাগান অফিস শুক্রবার বেলা ৩টা পর্যন্ত এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ১২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় ভূমি ধসের আশঙ্কা রয়েছে। পূর্বাভাসে সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা এবং নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম