Logo
Logo
×

সারাদেশ

সভাপতি-ঠিকাদার দ্বন্দ্বে সিঁড়ির নিচে ক্লাশ!

Icon

রাজাপুর (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৩, ০৮:৩৬ পিএম

সভাপতি-ঠিকাদার দ্বন্দ্বে সিঁড়ির নিচে ক্লাশ!

ঝালকাঠির রাজাপুরে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও কাজের ঠিকাদারের দ্বন্দ্বে বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে ক্লাশ রুম না থাকায় শিক্ষকরা পড়েছেন বিপাকে। ফলে বাধ্য হয়ে বিদ্যালয়ের সিঁড়ির নিচসহ পাশে একটি বাজারের খোল টোলঘরে ক্লাশ নিতে হচ্ছে।

উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের নিজামিয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এমন অবস্থা।

অফিস সূত্রে জানা গেছে, মেসার্স চাঁন এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ের চার কক্ষবিশিষ্ট একতলা একটি ভবন নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায়। পরে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় আরও ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়। কাজটি ২০২২ সালের আগস্ট মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু এখন মাটি কাটা শুরু হয়েই থেমে গেছে। 

বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ভেঙে ২০২২ সালের ২০ মার্চ বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ মাটি কাটার মধ্য দিয়ে শুরু হয়। নির্মাণ সামগ্রীও আনা হয় কিন্তু নির্মাণ কাজের শুরুতেই ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সঙ্গে কাজের স্থানের বৈদ্যুতিক খুঁটিসহ সঞ্চালন লাইন সরানো নিয়ে ঠিকাদারের দ্বন্দ্বে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

এরপর থেকেই বিদ্যালয়ের দুইটি পুরাতন ক্লাশরুম পার্টিশন দিয়ে চারটি ক্লাশরুম, একটি সিঁড়ির নিচে ও তিনটি বাজারের টোলঘরে ক্লাশ বসে। অফিস রুম করা হয়েছে পাশের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মধ্যে। সেটি যেকোনো সময় ভেঙে পরতে পারে। ক্লাশের ভালো পরিবেশ না থাকায় দিনে দিনে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ে ২২৪ জন শিক্ষার্থী ছিল, কমতে কমতে বর্তমানে ১২০ জন রয়েছে। 

স্কুলের শিক্ষার্থী লামিয়া, আলবাকি, লাইসা ও নয়ন জানায়, টোলঘরে খোলা জায়গায় ক্লাশ করতে খুবই অসুবিধা হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদের তাপ বেড়ে যায় তখন আর বসা যায় না। আবার বৃষ্টি আসলে পানিতে বই-খাতা ভিজে যায়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হারুন-অর-রশিদ জানান, স্কুলের পুরাতন ভবন ভেঙে কাজ শুরু করলেও সভাপতি-ঠিকাদারের দ্বন্দ্বের কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে নতুন ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। ভবন না থাকায় সামনে নতুন বছরে নতুন ক্লাশে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারব না। তাই দ্রুত ভবন নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. জাহিদুল আবেদীন জানান, খেলার মাঠ ছোট করা যাবে না আর কাজের মান ঠিক রেখে কাজ করতে বলাকে কি দ্বন্দ্ব বলা হয়। ঠিকাদারের কাজের মান খুব খারাপ, সে কাজের জন্য যেসব নির্মাণ সামগ্রী এনেছে তা নিম্নমানের। বিদ্যুতের খুঁটি সরাতে যে খরচ হবে তা ঠিকাদারকেই বহন করতে হবে আমরা তাকে সহায়তা করব।

কাজের ঠিকাদার মো. আনোয়ার হোসেন মৃধা মজিবর জানান, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমরা কাছে কিছু টাকা দাবি করেছিলেন। তাদের দেখানো জায়গায় মাটি কাটা হয়েছিল। এখন টাকা না দিয়ে কাজ শুরু করায় বিদ্যুতের খুঁটি সরিয়ে এখন পেছনে যেতে বলে। বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর একটা অজুহাত দেখিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি নতুন এসেছি। কাজের সাইট পরিদর্শন করে ইতোমধ্যে শিগগিরই কাজ শুরু করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম