বিয়ের তৃতীয় দিনে স্বামীর সামনেই ছাদ থেকে পড়ে স্ত্রীর মৃত্যু!
মহানগর উত্তর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৩, ০৮:৪০ পিএম
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীর কুদ্দুসনগর এলাকায় বিয়ের তৃতীয় দিনেই স্বামীর সামনে ৫ তলার ছাদ থেকে পড়ে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার বিকাল ৫টায় জহিরুল হক মোল্লার বাড়ির ছাদ থেকে আঞ্চলিক সড়কে পড়ে মারা যান ওই নববধূ।
মৃত ওই নববধূর নাম শিল্পী আক্তার (২০)। তিনি ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার বাটি বিলপাড়া গ্রামের তারা মিয়ার বড় মেয়ে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহত শিল্পী পালিয়ে বিয়ে করেন আব্দুর রহিম (২২) ওরফে আরাফাতকে। নিহতের স্বামী আব্দুর রহিম পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার পতাকাটা গ্রামের হযরত আলীর ছেলে। তিনি ঢাকার একটি ক্লাবে সিভিলে চাকরি করেন।
মৃতের ছোট বোন লিপি আক্তারের স্বামী মো. আব্দুল্লাহ যুগান্তরকে জানান, তিনি জহিরুল হক মোল্লার বাড়ির ভাড়াটিয়া হিসেবে এক সপ্তাহ আগে ৩ তলায় উঠেছেন। গত সোমবার হঠাৎ করেই তার নিহত বোন জামাই নিয়ে বাসায় আসেন। এ সময় তার বোন তাকে জানান- তারা বিয়ে করেছেন কিন্তু বিয়ের কোনো ডকুমেন্টস ছিল না। দুই দিন বাসায় থাকার পর নিহতের স্বামী আব্দুর রহিম ওরফে আরাফাত ছোট বোনের বাসায় তিন মাসের জন্য রেখে চলে যেতে চাইলে বিকাল সাড়ে ৪টায় নিহত শিল্পী ও লিপিসহ রহিম বাড়ির ছাদে যান। ছাদে গিয়ে ছোট বোনকে ছাদের অন্যপ্রান্তে পাঠিয়ে দেন নিজেরা কথা বলার জন্য। এর কিছুক্ষণ পরেই তার বোনের নিচে পড়ার ঘটনা ঘটে। তবে কিভাবে পড়ল তিনি তা দেখেননি বলে জানান।
নিহতের বাবা তারা মিয়া জানান, মেয়ে শিল্পী বাড়ি থেকে পালিয়ে এসে ফোনে জানায় সে বিয়ে করেছে এবং গার্মেন্টসে চাকরি করবে।
নিহতের ছোট বোনের স্বামী মো. আব্দুল্লাহ জানান, তার স্ত্রীর বড় বোন ছাদ থেকে পড়ার পর নিহতের স্বামী বারবার পালানোর চেষ্টা করেন। অবশেষে তাকে অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে বেঁধে রাখতে বাধ্য হন তারা।
এদিকে নিহতের লাশ নিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া পাবার আশায় অ্যাম্বুলেন্স চালক রুবেল (৩৫) পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে নগরীর কোনাবাড়ী ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে লাশ নিয়ে প্রথমে তাইরুন্নেছা হাসপাতাল যান। পরে নান্দাইল থানায় গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান লাশ।
এ বিষয়ে কোনাবাড়ী মেট্রো থানা তদন্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, তরুণীর মৃত্যুর খবর পেয়ে কোনাবাড়ী হাসপাতালগুলোতে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়। লাশ ও লাশের আত্মীয়স্বজনকে না পেয়ে খোঁজখবর নিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করে নিহতের গ্রামের বাড়িতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সহযোগিতায় নান্দাইল থানার ওসির মাধ্যমে লাশ ও নিহতের স্বামীকে আনা হয়েছে। নিহতের স্বামী রহিমকে আটক করা হয়েছে। নিহতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলার প্রস্তুতি চলছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।