সন্তানের অসুখে অসহায় বাবা-মা
পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৩, ০৮:১০ পিএম
আনন্দ সিং দুরারোগ্য অসুখ সঙ্গে নিয়েই পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতামাতার নেই বাড়ি করার এক শতক জায়গা-জমি। সরকারি খাস জায়গায় ছোট্ট একটি কুড়েঘরে ২ বোন ও মা-বাবা মিলে বসবাস করে গাদাগাদিভাবে। বাড়িতে নেই কোনো টিউবওয়েল ও পায়খানার ব্যবস্থা। মহল্লার সরকারি কল থেকে পানি ও অস্বাস্থ্যকর জরাজীর্ণ পায়খানা ব্যবহার করে তারা।
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি পৌর শহরের কুলিপট্টি (তুরিপাড়া) রেলওয়ে বস্তিতে তারা বসবাস করে। এ বস্তিতে বসবাস করা প্রায় ৩-৪শ মানুষ সরকারের দেওয়া ৩টি টিউবওয়েল ও ২টি পায়খানা ব্যবহার করে। আনন্দ-হাসি-খুশি ৩ ভাইবোন একই দিনে (যমজ) জন্মগ্রহণ করে।
জন্মের পর থেকে হাসি-খুশির শরীর স্বাস্থ্য ও বেড়ে ওঠা স্বাভাবিক হলেও আনন্দ রক্তশূন্যে ভুগছিল। আনন্দের মা পুষ্প রানী সিং অন্যের বাসা-বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে। বাবা তপন সিং ভাড়ায় রিকশা চালানোর আয়ে ৫ সদস্যের সংসার চালায়।
বাবা-মায়ের অল্প আয়ে যখন সংসার চলায় কষ্টসাধ্য তার ওপর ছেলের এমন অবস্থা। আনন্দকে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখালে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পরে তার শরীরে থ্যালাসেমিয়া রোগ বাসা বেঁধেছে। এ রোগের চিকিৎসা প্রতিমাসে শরীরে এক ব্যাগ রক্ত দিতে হবে।
তপন সিং বলেন, রিকশা চালিয়ে যা আয় করি খেয়ে না খেয়ে ছেলের রক্ত কিনার জন্য টাকা জমা করি। অনেকেই স্বেচ্ছায় আমার ছেলেকে রক্ত দিয়েছেন। ছেলেমেয়েদের বয়স এখন ৮ বছর, তারা পৌর শহরের গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ালেখা করে।
তপন আরও বলেন, প্রায় প্রতিদিন ছেলেমেয়েকে স্কুলে রেখে আসি যদিও ছুটির পর আনতে পারি না। ছেলের চিকিৎসার সহায়তার আশায় সমাজসেবা অফিসে কাগজপত্র জমা দিয়েছি।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, সহায়তার জন্য কেউ আবেদন করলে সে সরকারি সুযোগ-সুবিধা যেন পায় আমরা অতিদ্রুত আবেদনটি জেলা অফিসে প্রেরণ করি।