শিশু হাসপাতালে মেয়াদোত্তীর্ণ পাউরুটি সরবরাহ!
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২৩, ১০:২০ এএম
ঝিনাইদহ ২৫ শয্যার শিশু হাসপাতালে মেয়াদোত্তীর্ণ পাউরুটি সরবরাহ করা হয়েছে। অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন শিশুরা। আতংকিত হয়ে পড়েছেন রোগীর স্বজনরা।
জড়িত সরবরাহকারীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটনাটি ঘটে। অভিযোগ সারা দিন ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
তবে সন্ধ্যার পরে সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সরবরাহকারীকে ডেকে বকাঝকা করা হয়েছে। তবে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি বলে জানান তিনি।
এদিকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হাসপাতালটি পরিদর্শনকালে খবরের সত্যতা বেরিয়ে আসে। জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছে আদনান।
তার মা জেলা শহরের আরাপপুর গ্রামের মিম জানান, সকালে পাউরুটি এবং ডিম সরবরাহ করা হয়। পাশের বেডের রোগীর মায়ের চোখে পড়ে পাউরুটির প্যাকেটে ১৭ জুন ২০২৩ লেখা আছে। মুহুর্তে ভর্তি রোগীর স্বজনদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। তারা ঘটনাটি কর্তব্যরত নার্সকে জানান। হইচই পড়ে যায়। এর পর ছুটে আসেন আবাসিক মেডিকেল অফিসারসহ সংশ্লিষ্টরা। পাউরুটিগুলো না খাওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেন এবং সরবরাহ করা পাউরুটিগুলো সংগ্রহ করেন।
একাধিক স্বজন জানান, এ ঘটনার পরে আতংকিত হয়ে পড়েন তারা। আনেকেই দুপুরে খাবার নেননি। তারা বলেছেন রুটি কেলেংকারির পরে চরম সতর্কতা মধ্যে রয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছেন তারা।
এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নেওয়াজ মোর্শেদ জানান, মেয়াদোত্তীর্ণ পাউরুটি সরবরাহ করার ঘটনা সত্য। তিনি নিজে সেগুলো পরীক্ষা করেছেন। ১৭ জুন প্রস্তুত করা ওই রুটি কাউকে খেতে দেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, আল্লাহ রহমত করেছেন, বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছে শিশুরা। এ কর্মকর্তার ভাষায় বাবু নামের জনৈক ব্যক্তি হাসপাতালের খাবার সরবরাহকারী ঠিকাদার। তবে ওই ঠিকাদারের বিষয়ে বিস্তারিত জানা নেই বলে দাবি করেন তিনি।
অন্যদিকে হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আলি হাসান ফরিদ বলেন, পাউরুটি গুলো প্রস্তুত করা হয়েছে স্থানীয় একটি বেকারিতে। ঠিকাদারসহ ওই প্রস্তুতকারীকে ডেকে থ্রেট (বকাঝকা) করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত রোগীদের কোনো সমস্যা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
পথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স বার্ডস কনস্টাকশনের মালিক মো. মামুন আজিজ বাবু রাত ৮টার দিকে যুগান্তরকে বলেন, জেলা শহরের হামদহের লিয়াকত নামের এক ব্যক্তির কারখানা থেকে রুটিগুলো নেওয়া হয়।
ঘটনা সত্য বলে স্বীকার করে তিনি দাবি করেন, রুটিতে সিল দেওয়ার সময় ভুলক্রমে ১৭ জুলাইয়ের স্থলে ১৭ জুন দেওয়া হয়েছে। রুটির মান সঠিক ছিল বলে দাবি তার।
হাসপাতালের কর্তব্যরত স্টাফ নার্স (সেবিকা) সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ৩৬ জন শিশু নানা রোগ নিয়ে ভর্তি আছে। এদের মধ্যে পথ্য সরবরাহ করা হয়ে থাকে মাত্র ২৫ জনের।