কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমেছে, ভোগান্তি কমেনি
আহসান হাবীব নীলু, কুড়িগ্রাম
প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৩, ১০:২৯ পিএম
কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমে গেলেও কমেনি ভোগান্তি। রোববার বিকালে দুধকুমার নদীর পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৪ সেমি ও ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ২১ সেমি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এখনো নিম্নাঞ্চলে পানি অবস্থান করায় মাঠের ফসল নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষক। কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা কৃষকের।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায় জানান, চলতি বন্যায় এখন পর্যন্ত ৬৫০টি পুকুরের ১৩০ টন মাছ ভেসে গেছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক কৃষিবিদ বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, বন্যার কারণে মাঠে অবস্থিত ফসলের মধ্যে ১ হাজার ৪৮৭ হেক্টর ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে শাক-সবজি ২৬২ হেক্টর, আউশ ধান ২৪৪ হেক্টর, বীজতলা ৩৮০ হেক্টর, কলা ২০ হেক্টর এবং পাট ৫৮১ হেক্টর। এর মধ্যে শাকসবজি পুরোটাই বিনষ্ট হয়ে গেছে। পানি নেমে গেলে বাকি ফসলের ততটা ক্ষতি হবে না।
জেলা শিক্ষা অফিসার ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বন্যার কারণে ১১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজ বন্ধ রয়েছে। আর ৫৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস তার সরবরাহকৃত তথ্যে জানিয়েছে, চলতি বন্যায় ৪৫টি ইউনিয়নের ১৮৫টি গ্রাম সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বন্যা কবলিত হয়েছে ৬১ হাজার ৪৫জন মানুষ। জেলার ৩৬১টি আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে ২১টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১৮০টি পরিবারের তিনশজন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত ২২ হাজার পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ১০ টন চাল, ১০ লাখ টাকা ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার অতিরিক্ত বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, এখন পর্যন্ত বন্যার্তদের জন্য ৩৬৩ মেট্রিক টন চাল, সাড়ে আট লাখ টাকা ও ২২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে।