বানের পানিতে ডুবে গেছে বিকল্প সেতু, ভোগান্তিতে হাজারও মানুষ
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৩, ০৫:৫৮ পিএম
কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলায় এক সপ্তাহ ধরে বানের পানিতে ডুবে আছে বিকল্প সেতু। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কলাগাছের ভেলায় পারাপার হচ্ছেন হাজারও মানুষ। সেতুটি ফুলবাড়ী উপজেলা সদর হতে এক কিলোমিটার দূরে নীলকমল নদের উপর।
কয়েক মাস আগে সেতুটি ভেঙে নতুন সেতুর কাজ শুরু হয়। মানুষের চলাচলে ভোগান্তি কমাতে নির্মাণাধীন সেতুর পাশে তৈরি করা হয় একটি বিকল্প সেতু; কিন্তু সেই সেতুটিও এখন বন্যার পানিতে ডুবে আছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গোড়ায় গলদ। প্রকৌশল বিভাগ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্থানীয় ও অভিজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করে নিচু জায়গায় বিকল্প সেতু নির্মাণ করা হয়। জনগণের আপত্তির তোয়াক্কা না করে নিচু জায়গায় বিকল্প সেতু নির্মাণ করার ফলে নিচু সেতু দিয়েই মালামাল পরিবহণে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয় মানুষকে। আর এখন সাধারণ বন্যায় বিকল্প সেতুটি ডুবে গেছে। পারাপারে ভরসা এখন কলাগাছের ভেলা। বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল। ভোগান্তির শিকার হাজার হাজার মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সড়ক ও জনপদ বিভাগের অধীনে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে ৩১ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক তিন মিটার প্রস্থের গার্ডার সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চুক্তি মোতাবেক ১৫ নভেম্বর ২০২২ তারিখ কাজ শুরু করে ৩০ জুন ২০২৪ তারিখে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা। তবে সড়ক বিভাগ বলছে কাজের যে অগ্রগতি হয়েছে তাতে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
সেতু নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চললেও নির্মাণাধীন সেতুটির কারণেই উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়ন, বড়ভিটা ইউনিয়ন ও ভাঙ্গামোর ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষকে যাতায়াতে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। মানুষের চলাচলের জন্য বিকল্প যে সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে উপজেলার সদরের সঙ্গে সরাসরি তিন ইউনিয়নের যান চলাচল।
স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান ও আব্দুর রহিম বলেন, নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সেতুটি দায়সারাভাবে করা হয়েছে। আমাদের মতামতকে অবজ্ঞা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছি। আসলে আচমকা পানি বৃদ্ধির ফলে বিকল্প সেতুটি তলিয়ে গিয়ে মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। বন্যার পানি কিছুটা কমছে। এখনো সেতুর উপর দুই ফুট পানি। আমরা আশা করছি দুই-এক দিনের মধ্যেই সেতু থেকে পানি নেমে যাবে। বন্যার পানি নেমে গেলে মানুষের দুর্ভোগ কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মূলত সেতুর পাশে জায়গা না থাকায় বিকল্প সেতু নিচু স্থানে করতে আমরা বাধ্য হয়েছি।