শিক্ষার্থীদের দিয়ে স্কুলের নোংরা কাপড় ধোয়ানোর ঘটনায় তদন্ত কমিটি

বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৩, ১০:৪৭ পিএম

বানারীপাড়ায় নরত্তমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দিয়ে স্কুলের নোংরা কাপড়-চোপড় ধোয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় দিনভর তদন্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বে দুই সদস্যর তদন্ত কমিটি দিনভর প্রাথমিক বিদ্যালয় কম্পাউন্ডে সরেজমিন তদন্ত করেন।
এ সময় তারা বিদ্যালয় কম্পাউন্ড পরিদর্শন করার পাশাপাশি ওই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে পৃথকভাবে তথ্য সংগ্রহ করেন। পরে তারা এ ব্যাপারে দুই দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিমল কৃষ্ণ ঘরামীকে শোকজ করার পাশাপাশি আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশসহ রিপোর্ট তৈরি করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহোন লাল দাসের কাছে পাঠানো হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার যুগান্তরকে জানান, মঙ্গলবার তার নেতৃত্বে দুই সদস্যর তদন্ত কমিটি সরেজমিন গিয়ে তদন্ত করেছেন। এ সময় তারা ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিমল কৃষ্ণ ঘরামীকে দুই দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। এছাড়া তারা আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে এ ব্যপারে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশসহ রিপোর্ট পাঠানো হবে বলে জানান। এর আগে সোমবার তিনি ওই ব্যাপারে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার হোসনেয়ারা বানুকে তদন্ত করে মঙ্গলবারের মধ্যে তার কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহোন লাল দাস যুগান্তরকে জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিসার এখনো তার কাছে তদন্ত রিপোর্ট পাঠায়নি। রিপোর্ট পেলে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে বিমল কৃষ্ণ ঘরামী যুগান্তরকে জানান, তার বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক নিলুফা ইয়াসমিন ও হাফিজা পারভীন লাইব্রেরিতে আসবাবপত্র ঠিকঠাক করছিলেন। এ সময় পঞ্চম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী স্বেচ্ছায় তাদের সঙ্গে ওই কাজ করতে সহায়তা করছিল। এছাড়া তার বিদ্যালয়ে কোনো চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও নাইটগার্ড না থাকায় সেখানের প্রয়োজনীয় কাজকর্ম তাদের নিজেদের করতে হয়। এক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে দুই-একজন শিক্ষার্থী স্বেচ্ছায় সাহায্য করতে এগিয়ে আসে বলেও তিনি জানান।
তিনি অভিযোগ করেন, তার বিদ্যালয়সহ উপজেলার ৩৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনো চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও নাইট গার্ড নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে তাদের নিয়মিত শ্রেণি পাঠদানের পাশাপাশি ওই কর্মচারীদের কাজও করতে হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার যুগান্তরকে জানান, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে দীর্ঘ দিন ধরে উপজেলার ৩৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও নাইট গার্ড নিয়োগ স্থগিত রয়েছে। এ কারণে তারা ওই সব বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও নাইট গার্ড নিয়োগ দিতে পারেননি।