Logo
Logo
×

সারাদেশ

ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের চাল বিতরণের তালিকায় চেয়ারম্যানের বাবা চাচা ভাই ভাতিজা

Icon

রংপুর ব্যুরো

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৩, ০৮:০০ পিএম

ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের চাল বিতরণের তালিকায় চেয়ারম্যানের বাবা চাচা ভাই ভাতিজা

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট ইউনিয়নে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত দুস্থ ও অতিদরিদ্র ব্যক্তিদের খাদ্য সহায়তার তালিকায় ভুয়া নাম দিয়ে চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্যানেল চেয়ারম্যান গোলজার হোসেনের বিরুদ্ধে। তালিকায় চেয়ারম্যানের বাবা, চাচা, ভাতিজা ও আপন ছোট ভাইয়ের নাম রয়েছে।

সুবিধাভোগীদের মধ্যে সচ্ছল, বিদেশে কর্মরত, একই ব্যক্তির নাম একাধিকবার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ওই ইউনিয়নের ২৯৮ জনের চাল বিতরণ দেখানো হয়েছে।

এ বিষয়ে মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ করেছেন ওই ইউনিয়নের কয়েরমারী গ্রামের বাসিন্দা আবু তাহের মিয়া। এরই সূত্র ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত রতন পবিত্র হজ পালন করতে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য গোলজার হোসেন। ওই ইউনিয়নে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ২৯৮ জনকে ২০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয় উপজেলা প্রশাসন। এরই সুযোগে প্যানেল চেয়ারম্যান তার স্বজন ও সচ্ছল ব্যক্তিদের নামের তালিকা প্রণয়ন করে প্রায় ৬ টন চাল আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে প্যানেল চেয়ারম্যান গোলজার হোসেনের আপন ছোট ভাই মালয়েশিয়া প্রবাসী নয়ন মিয়া, তার পিতা ছামছুল মিয়া, মামা আব্দুল সালাম ও নিকট আত্মীয়-স্বজনদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

এছাড়াও ছুটিতে থাকা চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত রতনের বাবা চাঁন মিয়া, ছোট ভাই মিলন মিয়া, চাচা ইউনুস মিয়া, ভাতিজা রিপন মিয়া, মৃত ব্যক্তি বাদশা মিয়া ও সাবেক পুলিশ সদস্যের ছেলে রানা মিয়ার নাম রয়েছে তালিকায়। চাল উত্তোলনের পর প্যানেল চেয়ারম্যান গুটিকয়েক উপকারভোগীকে চাল দিয়ে অবশিষ্ট বরাদ্দ আত্মসাৎ করেছেন।

উপকারভোগী লতুফা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার নামে চাল বরাদ্দ ছিল কিন্তু চেয়ারম্যান আমাকে চাল না দেয়নি।

আরেক উপকারভোগী আজাহার আলী বলেন, ঝড়ে আমার কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তারপরও তালিকায় নাম ছিল কিন্তু চাল পাইনি। শুনেছি প্যানেল চেয়ারম্যান ভুয়া নাম দিয়ে চালগুলো তুলে নিয়েছেন।

বালারহাট ইউনিয়ন পরিষদ সচিব শফিকুল ইসলাম বলেন, প্যানেল চেয়ারম্যান আমাকে কোনো কিছু জানায়নি। নিজের ইচ্ছামতো তালিকা প্রণয়ন করে বরাদ্দ উত্তোলন করেছেন। বেশিরভাগ ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় নাম আসেনি।

বালারহাট ইউনিয়ন পরিষদের ট্যাগ অফিসার ও বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রায়হান হাবিব বলেন, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মাস্টার রোল প্রণয়ন ও চাল বিতরণ কার্যক্রম আমাকে জানানো হয়নি। প্যানেল চেয়ারম্যান বিষয়টি ভালোভাবে বলতে পারবেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্যানেল চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন বলেন, নিয়মানুযায়ী তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে চালগুলো বিতরণ করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো মিথ্যা।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান সরকার বলেন, প্যানেল চেয়ারম্যান মাস্টাররোল তৈরি করে তালিকা পাঠিয়েছেন। সেই অনুযায়ী বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। যদি কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়ে থাকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রকিবুল হাসান বলেন, এ রকম একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম