Logo
Logo
×

সারাদেশ

তেলবাহী জাহাজে বিস্ফোরণ, ১১ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে

Icon

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৩, ০৬:৩২ পিএম

তেলবাহী জাহাজে বিস্ফোরণ, ১১ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বিস্ফোরিত জাহাজ সাগর নন্দিনী-২ থেকে ডিজেল খালাসের সময় আবারো বিস্ফোরণের ঘটনার ১১ ঘণ্টা পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বিস্ফোরণকালে দুইজন দগ্ধসহ ১২ পুলিশ নদীতে লাফিয়ে পড়ে আহত হয়েছেন।

সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিস্ফোরণে জাহাজটিতে আবারো আগুন লেগে যায়। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। তাদের সহযোগিতা করে কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ। মঙ্গলবার ভোর ৫টায় আগুন পুরোপুরি নিভে যায়।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, সাগর নন্দিনী-২ এর জ্বালানি তেল খালাসের সময় সাব-মারসেবল পাম্প প্রচণ্ড তাপে বিস্ফোরিত হয়ে পুরো জাহাজে আগুন লেগে যায়। ঢাকা থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল রাতেই ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে। ফোম দিয়ে রাতভর চেষ্টায় ভোরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

বিস্ফোরণে দগ্ধ পুলিশ কনস্টেবল শওকত জামিল (২৩) ও জাহাজের স্টাফ মো. শরীফকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। আহত অন্যদের ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। অগ্নিদগ্ধ পুলিশ সদস্য দীপ (২৩) বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

এছাড়া ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন- এসআই আব্দুল হাকিম (৫০), এসআই গনেশ (৪২), কনস্টেবল লিপন গাইন (২৮), সাইফুল (৩০), নকিব (৩০), মেহেদী (২৭), পলাশ (২৫), বরিশাল নৌ-পুলিশের নায়েক সিদ্দিক, এসআই মোস্তফা কামাল (৪৩) ও এটিএসআই হেলাল উদ্দিন।

বিস্ফোরণের পর রাতভর আতঙ্কে ছিল সুগন্ধা নদী তীরের বাসিন্দারা। এমন আগুন শহরবাসী আগে কখনো দেখেনি। ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের। শহরের মধ্যেই সুগন্ধা নদীর তীরে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা কোম্পানির তিনটি ডিপো রয়েছে। এতে প্রতিদিন ৫-৬টি জাহাজ ভেড়ে জ্বালানি তেল খালাস করে। নদীতে এভাবে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষুব্ধ শহরবাসী। সুগন্ধা নদীতীরে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন নৌ-ফায়ার স্টেশন স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন শহরবাসী। শহরের মধ্য থেকে তেলের ডিপো সরিয়ে নেওয়া এবং নদীতে তেলবাহী একাধিক জাহাজ নোঙর করে না রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন শহরের সচেতন বাসিন্দারা। শহরকে নিরাপদ রাখতে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন নৌ-ফায়ার স্টেশনের দাবি দীর্ঘদিনের।

কোস্টগার্ড অপারেশন কর্মকর্তা লে. মো. শাফায়েত বলেন, দ্বিতীয় দফায় বিস্ফোরণের সময় কোস্টগার্ডের একটি জাহাজ ছিল ঘটনাস্থলে। বিস্ফোরণ এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, ১০০ মিটারের মধ্যে কোনো উদ্ধারকারী দল পৌঁছতে পারছিল না। জ্বালানি তেল ছড়িয়ে পড়া রোধে কাজ করেছে কোস্টগার্ড।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, জাহাজের স্টাফদের অসাবধানতার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ঝালকাঠির নৌরুট নিরাপদ এবং নৌ-চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুর ২টায় ঝালকাঠি পৌর মিনিপার্কে প্রেস ব্রিফিং করেন জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার কারণ এখনো জানা যায়নি। ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, পুলিশ অক্লান্ত পরিশ্রম করে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়েছে। এজন্য তাদের প্রতি আমরা সবাই কৃতজ্ঞ। দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজ থেকে প্রায় সাত লাখ লিটার তেল পদ্মা ডিপোতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। জাহাজের মধ্যে এখন কী পরিমাণ জ্বালানি তেল রয়েছে তা নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।

তিনি আরও বলেন, ঝালকাঠির সুগন্ধা নদী একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক কেন্দ্র হওয়ায় এখানে একটি নৌ-ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম