টানা তিন দিনের বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে খুলনার কয়রা উপজেলার জনজীবন। স্থবির হয়ে পড়েছে সব কার্যক্রম। প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে কয়রার মানুষ মসজিদে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন।
গত সোমবার দিবাগত রাত থেকে অবিরাম বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে প্রায় আটশ মৎস্য ঘের। নষ্ট হয়েছে ক্ষেতের ফসল। এ যেন এ জনপদের মানুষের উপরে মরার উপর খাড়ার গাঁ। টানা বৃষ্টিপাতের ফলে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের পুকুর, রাস্তা ঘাট ও বাড়ির আঙিনা তলিয়ে গেছে।
জানা গেছে, গত তিন দিনের টানা বৃষ্টির পানিতে ফের একাকার খাল, বিল, পুকুর, রাস্তা ঘাট ও মৎস্য ঘের। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ নিয়ে বন্যা আতঙ্কে পড়েছেন নদী পাড়ের মানুষ। সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। ঘরের বাইরে না যেতে পারায় তাদের সংসারে চলছে চরম দুর্ভোগ। শুধু তাই নয় যানবাহনের চালকরা পড়েছে বিপাকে। দুই চারটি যানবাহন বের করা হলেও বেড়েছে ভাড়ার পরিমাণ, ফলে দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। ব্যবসায়ীদের মিলছে না তেমন ক্রেতা। অলস সময় পার করছেন ইজিবাইক, ভ্যান ও অটো চালকরা।
উপজেলা মানবকল্যাণ ইউনিটের সভাপতি মো. আল আমিন ফরহাদ বলেন, যথাযথ ড্রেনেজের ব্যবস্থা না থাকায় কয়রা সদরের প্রধান সড়ক সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় আর সবাইকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তারপরও সড়কটি সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ভাঙা চোরা, খানাখন্দে ভরে গেছে। এদিকে টানা বৃষ্টিতে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ কাজে যেতে না পারায় পরিবার পরিজন নিয়ে দু’চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে। ঈদের দিনে অনেক ভ্যান, ইজিবাইক চালকরা বেশি ভাড়া পাওয়ার আসায় বসে থাকে। তবে অতি বৃষ্টি সব ম্লান করে দিয়েছে তাদের।
কয়রার ভ্যান চালক আ. হাই বলেন, বৃষ্টির কারণে রাস্তা ঘাটে মানুষ নেই। ভ্যান চালিয়ে তাকে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। মানুষ না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন তিনিসহ শত শত ভ্যানচালক। যাদের একমাত্র আয়ের উৎসই হচ্ছে ভ্যান চালানো।
উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. আমিনুল হক বলেন, কয়রায় কয়েক দিনের টানা বর্ষণে প্রায় আটশ মৎস্য ঘের তলিয়ে গেছে। মৎস্য চাষিদের মাছ টিকিয়ে রাখতে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।