হাসপাতালের বারান্দায় ৪ দিন, চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর অভিযোগ
উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৩, ০৯:৪৫ পিএম
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায় চার দিন পড়ে থেকে চিকিৎসার অভাবে এক ভবঘুরে ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরে উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন পূর্বে উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের কয়েকজন ব্যক্তি অসুস্থ অবস্থায় এক অজ্ঞাত ভবঘুরেকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে যান। সেদিন থেকে ওই ব্যক্তি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে থাকা (চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বসারস্থানে) পাকা বেঞ্চে ছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একজন অসুস্থ মানুষকে চার দিন ধরে বারান্দায় পড়ে থাকতে দেখেও তার অভিভাবক না থাকার অজুহাতে চিকিৎসাসেবা দেননি বলে জানা গেছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা নিতে আসা চাঁদ মিয়া, শাহাবুদ্দিন ও সৈয়দ আলীসহ কয়েকজন বলেন, অজ্ঞাতনামা ওই ব্যক্তি চার দিন ধরে হাসপাতালের বারান্দায় পড়ে ছিলেন। আমরাই তাকে কলা, রুটি ও পানি খেতে দিয়েছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা করেননি। সোমবার দুপুরে বিনা চিকিৎসায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান বলেন, তিন-চার দিন পূর্বে আমার এলাকা উমানন্দ কাজলডাঙ্গা স্কুলের বারান্দায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তি অসুস্থ অবস্থায় পড়েছিলেন। বিষয়টি আমি জানতে পেরে কয়েকজন লোকের মাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানোর ব্যবস্থা করি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মেহেরুল ইসলাম জানান, ওই ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি ছিল না। তিনি মানসিক রোগী ছিলেন। সে কারণে তার চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মেশকাতুল আবেদ বলেন, ওই ব্যক্তিকে যারা হাসপাতালে এনেছিলেন তারা তার প্রকৃত অভিভাবক নয়। তাদের হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছিল, এখানে উনার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। সে কারণে তাকে কুড়িগ্রাম বা রংপুর হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন। কিন্তু তারা সে কথা না শুনে সটকে পড়েন। ওই ব্যক্তি হাসপাতালসহ বাহিরেও চলাচল করেছেন। চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।
উলিপুর থানার ওসি শেখ আশরাফুজ্জামান বলেন, শুনেছি তিন-চার দিন পূর্বে তবকপুর ইউপির চেয়ারম্যান অজ্ঞাত এক রোগীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন। সোমবার দুপুরে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসার অভাবে তার মৃত্যু হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই।
তিনি আরও বলেন, মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট করার পর দাফনের ব্যবস্থা করা হবে।