‘হায়েনার কামড়ে হাত হারানো শিশু সাঈদের কেউ খোঁজ নিচ্ছে না’
গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৩, ০৯:২৪ পিএম
দুই বছরের শিশু সাঈদ আহাম্মেদকে সঙ্গে নিয়ে গত ৮ জুন মা-খালা ও নানা-নানি ঢাকার মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানায় বেড়াতে যান। এক পর্যায়ে হায়েনার খাঁচার কাছে গিয়ে সাঈদ তার ছোট্ট হাতটি খাঁচার ভেতরে ঢোকায়। এ সময় একটি হায়না তার হাত কামড়ে ধরে। স্বজনরা হায়ানার মুখ থেকে শিশুটিকে ছাড়াতে পারলেও প্রাণীটি কেড়ে নেয় সাঈদের এক হাতের কব্জি।
পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে ১১ দিন চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় শিশুটিকে নিয়ে আসা হয় তার নানা শরীফুল ইসলামের ভাড়া বাসা গাজীপুর মহানগরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মোগরখাল এলাকায়।
শনিবার সাঈদের মা শিউলী বেগমের (২৩) সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, সাঈদ আগে ডান হাতে খাবার খেত, খেলা করত, বই খুলে লেখাপড়া করত, অক্ষর লেখার চেষ্টা করত এবং মোবাইল ফোনে ছবি ও ভিডিও দেখত। সেই অভ্যাস থেকে সে এখন মনের ভুলে ব্যান্ডেজসহ ডান হাত নাড়ায়।
ব্যর্থ হয়ে নিজ থেকেই বাম হাতে তা করার চেষ্টা করছে। ব্যান্ডেজ করা হাতে চেপে ধরে বাম হাত দিয়ে মোবাইলে নিজের পুরোনো ভিডিও ছবি দেখে আর ডান হাতের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। আশপাশের তার খেলার সাথী শিশুদের দিকে তাকিয়ে দেখে। এ সময় কষ্টে বুকটা ফেটে যায়।
শিশুটিকে প্রায় সারাক্ষণ আগলে রাখছেন শিউলী বেগম ও মামা মিনহাজ ইসলাম।
মামা মিনহাজ ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার পর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা বাবদ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে ছিল। তারা সাঈদের বাবাকে চিড়িয়াখানায় চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। কি চাকরি, বেতন কত ও কবে দেবে চাকরি কিছুই বলেনি। সাঈদের ভবিষ্যৎ তো অন্ধকার।
সাঈদের ভবিষ্যৎ গড়ে দেওয়ার দাবি জানান তার মামা।
শিশুটির বাবা সুমন মিয়া বলেন, দুর্ঘটনার পর সাঈদের ভবিষ্যৎ দেখার দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলে ছিল। এখন কেউ কোনো খোঁজ খবর নিচ্ছে না।
তিনি ছেলের ভবিষ্যতের জন্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করেন।