বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান ছিলেন প্রথিতযশা রাজনীতিবিদ
ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৩, ০৪:০৮ এএম
বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, প্রথিতযশা রাজনীতিবিদ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের ডালিপাড়া গ্রামে তার নিজ বাড়িতে ছিল ঢাকা জেলা মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ক্যাম্প। পাকবাহিনী তার বাড়ির ক্যাম্পটি আগুনে পুড়িয়ে দেয়। তার পরিবারের সবাই মুক্তিযোদ্ধা। তার সহধর্মিণী আমেনা বেগম ছিলেন ঢাকা জেলার প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা।
শুক্রবার বিকাল ৪টায় উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের ডালিপাড়া আমেনা নুর ফাউন্ডেশন আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তারা বক্তৃতাকালে বক্তারা এসব কথা বলেন।
তারা আরও বলেন, তিনি সারা দেশ ঘুরে ঘুরে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করেছিলেন। তিনি ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে সংসদ সদস্য হওয়ার অফার পেয়েও তিনি তা গ্রহণ করেননি। ফলে ওই সময়ে পার্লামেন্ট মেম্বার হন জামাল উদ্দীন। তার মানসিকতা ছিল অনেক ঊর্ধ্বে। আমরা তাকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।
স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন- সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমদ, সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ মালেক, জেলা চেয়ারম্যান মোহাদ্দেশ হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুর রহমান খান, সাবেক রাষ্ট্রদূত বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব হোসেন, ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান প্রমুখ।
মঙ্গলবার বাদজোহর ২টার দিকে মরহুমের নিজগ্রাম উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের ডালিপাড়া আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই হাজার হাজার মানুষ জানাজায় শরিক হন। অন্য ধর্মের মানুষরাও মরহুমের বিদেহী আত্মার জন্য বিশেষ দোয়া প্রার্থনার আয়োজন করেন।
এর আগে সোমবার বেলা ৩টায় রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মোহাম্মদ নুরুজ্জামান। তিনি ওই হাসপাতালের আইসিও বিভাগে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
জীবদ্দশায় মোহাম্মদ নুরুজ্জামানের নিজ বাড়িতে ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ক্যাম্প। পাক হানাদার বাহিনী তিনবার ক্যাম্পসহ বাড়িটি আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিল।
তার ৪ ছেলে ৪ মেয়ে। সবাই সর্বোচ্চ শিক্ষা অর্জন করে সাতজন দেশের বাইরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনা ও হাসপাতালে চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। সর্বকনিষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ আল জামান আমান আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী। তিনি একজন সিআইপি (কমার্শিয়াল ইমপর্টেন্ট পার্সন)।
সিআইপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ আল জামান আমান বলেন, আমার বাবা ছিলেন একজন আদর্শ পিতা। তার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। তার মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত। তাকে হারিয়ে আমরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। আমরা তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। মহান আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতবাসী করেন।