উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শুক্রবারও যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে উপজেলার খুকনি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রাম, আরকান্দি, জালালপুর ইউনিয়নের মোহনপুর, পাকুরতলা রূপসী, সৈয়দপুর, কৈজুরি ইউনিয়নের গোপালপুর, চরকৈজুরি, পোরজনা ইউনিয়নের উল্টাডাব ও রাণীকোলা গ্রামের আরও নতুন নতুন নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের নেপিয়ার, গামা, ভুড়া ঘাসের জমি, সবজি, ধুঞ্চে ও পাটখেত বন্যার পানিতে ডুবে গেছে।
যমুনা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় এসব গ্রামের আরও ৩০টি বাড়িঘর ও শতাধিক গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
ভাঙনকবলিত এলাকার নারী, বৃদ্ধ ও শিশুরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। ভাঙন আতঙ্কে দিশেহারা মানুষের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।
পাঁচিল গ্রামের আব্দুল হালিম, আব্দুস সালাম ও আব্দুল জলিল জানান, গত কয়েক দিনে যমুনা নদীর ভাঙনে প্রায় দুই শতাধিক বাড়িঘর ও অসংখ্য গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন তারা কোথায় যাবে ও কোথায় থাকবে তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
আরকান্দি উত্তরপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, এক সপ্তাহ আগে যমুনার ভাঙনে তার বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সেই থেকে তিনি পাশের একটি পতিত জমিতে ছোট ঘর তুলে কোনোমতে বাস করছিলেন। চার দিন আগে এ জমিটি বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ায় এবং অন্য কোনো স্থানে যাওয়ার জায়গা না থাকায় তিনি চৌকি উঁচু করে বন্যার পানির মধ্যেই ছোট ভাই ও এক ভাগনেকে নিয়ে বাস করছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, বন্যা ও ভাঙনকবলিত পাঁচিল গ্রাম পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করতে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন বলেন, ভাঙনরোধে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সংযোগ না পাওয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও নাজমুল ইসলাম বলেন, সারা দিনে যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জ হার্টপয়েন্ট এলাকায় ৯ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পানি বৃদ্ধি ২/১ দিনের মধ্যে কমার সম্ভাবনা রয়েছে।