চমেক হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস বন্ধের ঘোষণা স্যান্ডরের
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৩, ১০:৫৬ পিএম
আবারো কিডনি ডায়ালাইসিস বন্ধের নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে অবস্থিত স্যান্ডর ডায়ালাইসিস সার্ভিস বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড। বুধবার প্রতিষ্ঠানের সামনে লাগানো এক নোটিশের মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে বকেয়া টাকা না পাওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় তারা।
পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপভাবে (পিপিপি) পরিচালিত এ প্রতিষ্ঠানটি এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার সেবা বন্ধের মাধ্যমে রোগীদের জিম্মি করার অভিযোগ রয়েছে। সেবা বন্ধ হলে কিডনি রোগীরা আবারো বিপাকে পড়বেন বলে সূত্র জানায়।
নোটিশে বলা হয়, বৃহস্পতিবার থেকে স্যান্ডর ডায়ালাইসিস সার্ভিস সংক্রান্ত সব কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ) কর্তৃক সার্ভিস পেমেন্ট পরিশোধে বারবার অনাকাঙ্ক্ষিত বিলম্ব ও অসহযোগিতার কারণে হঠাৎ করে এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। চিঠিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ) ফরিদা ইয়াসমিনের নাম ও ফোন নাম্বার উল্লেখ করে সেবা বন্ধ বা চালুর ব্যাপারে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। এমনকি এ ধরনের স্বাস্থ্যসেবা নিরবচ্ছিন্নভাবে চালাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ) আন্তরিক নন বলে ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
নোটিশে স্যান্ডর ম্যানেজারের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ডায়ালাইসিসের মতো জরুরি সেবা বন্ধ করার কোনো উদ্দেশ্য আমাদের নেই; কিন্তু এমন বিরূপ পরিস্থিতিতে সেবা চালু রাখা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। চলমান সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত রোগীদের বিকল্প ব্যবস্থা রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়।
স্যান্ডর ডায়ালাইসিস সার্ভিস বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সালে চমেক হাসপাতালের নিচতলায় প্রতিষ্ঠা হয়। এরপর থেকে বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য বেশ কয়েকবার বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি দুপুরের পর কাঁচামাল সংকটের কথা বলে ডায়ালাইসিস সেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় স্যান্ডর।
এ প্রসঙ্গে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান যুগান্তরকে বলেন, স্যান্ডরের সেবা বন্ধের নোটিশের বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি। তারপরও রোগীদের কথা চিন্তা করে বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছি। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ও কিছু জানে না। তারা বকেয়া টাকার কথা বলছে, কিন্তু আজকেও (বুধবার) মন্ত্রণালয় থেকে তাদের এক কোটি ৬৩ লাখ টাকা দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে তাদের কাছে সরকার কিছু ভ্যাট-ট্যাক্স পাওনা রয়েছে। সেগুলো এডজাস্ট করলে তারা খুব বেশি টাকা পাওয়ার কথা না।
পরিচালক আরও বলেন, ডায়ালাইসিস রোগীর জন্য এই সেবাটি পাওয়া বা না পাওয়া বাঁচা-মরার বিষয়। তাই স্যান্ডর কর্তৃপক্ষ এই সেবা কিভাবে হুট করে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়, সেটি আমার মাথায় আসে না। এ সিদ্ধান্ত জানার পর অনেক রোগী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।