সিলেটে নিরুত্তাপ ভোটে উপস্থিতি কম, সময়ের পরও ভোটগ্রহণ
সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৩, ০৪:৩২ পিএম
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ সকাল ৮টায় শুরু হলেও বিকাল পর্যন্ত উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। উৎসবহীন হলেও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শেষ সময়ের পরও ভোটগ্রহণ চলছে। মেয়র পদের দুই শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী ভিন্ন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ভোট দেওয়ার পর পরই।
নৌকার প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বিজয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করলেও সংশয় প্রকাশ করেন লাঙলের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। বাবুলের অভিযোগ, তাদের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন জানায়, সিলেট সিটিতে ১৯০টি কেন্দ্রে এক হাজার ৩৬৪টি বুথে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট নেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে ১৩২টি কেন্দ্রকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এক হাজার ৭৪৭টি সিসি ক্যামেরা দিয়ে সিলেট সিটির ভোট নির্বাচন ভবন থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
সিসিক নির্বাচনে ভোট দিতে সিলেট আসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য একে আব্দুল মোমেন। বুধবার সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে তিনি ভোট কেন্দ্রে আসেন এবং ভোট দেন সকাল ১০টায়। বন্দরবাজার এলাকার দুর্গাকুমার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেয়ার পর ভোটের পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে সকাল ৮টা ২০ মিনিটে মহানগরের ৮নং ওয়ার্ডের পাঠানটুলা শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দেন সিসিক নির্বাচনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের মেয়র পদপ্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তিনি ভোট দেওয়ার পর নিজের জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, নির্বাচনে জয় পরাজয় আছে, আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী, যদি কোনো কারণে বিজয়ী হতে না পারি, যিনি বিজয়ী হবেন আমি তার বাড়িতে ফুল নিয়ে যাব।
এরপর সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল সকাল সাড়ে ৯টায় আনন্দ নিকেতন স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেন। ভোট দেওয়ার পর তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনে পেশিশক্তির ব্যবহার হচ্ছে। আমার এজেন্টদের অনেক কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। আমার ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়া হচ্ছে। এভাবে সুষ্ঠু ভোট হয়না। তবে কোন কোন কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেয়া হচ্ছে তা সুনির্দিষ্টভাবে জানাতে পারেননি তিনি।
এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. আব্দুল হানিফ কুটু, ক্রিকেট ব্যাট প্রতীকের মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন, বাস প্রতীকের মো. শাহজাহান মিয়া, হরিণ প্রতীকের মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা, জাকের পার্টির ফুল প্রতীকের জহিরুল ইসলাম গোলাপ ফুল প্রতীকের তাদের নিজ নিজ কেন্দ্রে ভোট দেন।
অপরদিকে সিসিকের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক নগরী ছেড়ে ভোটের দিনে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের দাদা বাড়িতে। তিনি যুগান্তরকে বলেন, আমরা নির্বাচন বর্জন করেছি তাই অবসরের এই দিনে দাদা বাড়িতে আম কুড়াতে গেছি।
সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪২টি ওয়ার্ডে ২৭২ জন ও ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৮৭ জন মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ সিটির ২৫টি সাধারণ ও দুটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে বিএনপির ৪২ নেতাকর্মী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচন করায় তাদের বহিষ্কার করেছে বিএনপি। অপরদিকে জামায়াতের ১৫ নেতাও কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন।
এ সিটি করপোরেশনে ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৫৪ হাজার ৩৬৩, মহিলা দুই লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৪ জন ও হিজড়া ভোটার ছয়জন। সিসিক নির্বাচনে ১৯০টি কেন্দ্রের এক হাজার ৩৬৭টি ভোটকক্ষে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে। এ নির্বাচনে ১৯০টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। বাকি ৫৮টি কেন্দ্র সাধারণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।