Logo
Logo
×

সারাদেশ

সেই এসআইয়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু

Icon

ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৩, ০২:২৬ এএম

সেই এসআইয়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু

এসআই দেলোয়ার হোসেন। ফাইল ছবি

ঢাকার ধামরাইয়ে ৫০ হাজার টাকা ঘুস না দেওয়ায় জাসীম উদ্দিন নামে এক যুবককে মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে।

মাদক মামলায় যুবককে ফাঁসানোর প্রতিবাদে ওই এসআইয়ের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচির সংবাদ যুগান্তরসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষের টনক নড়ে।গত শনিবার থেকে ওই এসআইয়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় রোববার বিকালে সাভার-ধামরাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহিদুল ইসলাম ও ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হারুণ অর রশিদ সঙ্গীয় ফোর্সসহ উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের মারাপাড়া ও জালসা এলাকায় সরেজমিনে তদন্তে আসেন। সেইসঙ্গে পুলিশের কথিত সোর্স সুতিপাড়া ইউনিয়নের সাহা বেলীশ্বর গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে সোহেল রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

এদিকে ধামরাই থানা পুলিশের ওই এসআইয়ের বিচার ও শাস্তির দাবিতে শনিবার সকাল ১১টা থেকে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবার ও সংক্ষুব্দ এলাকাবাসী স্বতঃফূর্তভাবে এ ব্যক্রিমধর্মী কর্মসূচি শুরু করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১০ জুন রাতে ধামরাই থানার এসআই দেলোয়ার হোসেনের কথিত সোর্স ও উপজেলার সাহা বেলীশ্বর গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে সোহেল রানা কথা আছে বলে মারাপাড়া গ্রামের নুরমোহাম্মদ আলীর ছেলে জসীম উদ্দিনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। এরপর স্থানীয় খুরশেদ আলমের ইটভাটায় রাতভর আটকে রেখে নিজেকে বিশেষ বাহিনীর সদস্য দাবি করে জসীমের পরিবারের কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন। কোনো উপায় না দেখে পরিবারের সদস্যরা ২০ হাজার টাকা দিয়ে জসীম উদ্দীনকে ছাড়িয়ে আনেন।

পরদিন (১১ জুন) বিকাল ৪টার দিকে ফের ওই সোর্স সোহেল রানা ও এসআই দেলোয়ার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে জসীমকে আটক করেন। এরপর তাকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে রাত ১১টার দিকে থানায় নিয়ে যান এবং পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করেন। এসআইয়ের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাকে মাদক মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয় ১২ জুন দুপুরে।এ ঘটনায় জসীমের পরিবার ও এলাকাবাসী ক্ষুব্দ হয়ে যান। ওই এসআইয়ের বিচার ও শাস্তির দাবিতে তারা গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু করেছেন শনিবার সকাল থেকে।

জসীমের বাবা নুরমোহাম্মদ আলী বলেন, দারোগা দেলোয়ার আমাদের কাছে ৫০ হাজার টাকা ঘুস চেয়ে না পাওয়ায় সে ক্ষুব্দ হয়ে আমার ছেলেকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়েছে। আমি এর ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দেশবাসীর কাছে।

এ ব্যাপারে শিক্ষানবীশ আইনজীবী মো. মানিক মিয়া বলেন, এতবড় অন্যায় অমানবিক কর্মকাণ্ড কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এসআই দেলোয়ার হোসেনের সঠিক বিচার ও শাস্তি চাই।

সমাজসেবক শাহিন আলম বলেন, টাকার জন্য একজন পুলিশ অফিসার এতবড় জঘণ্য কাজ করতে পারে তা না জানলে কেউ বিশ্বাসই করবে না। আমরা এর বিচার ও শাস্তি প্রত্যাশা করছি। আশা করছি, আমরা ন্যায়বিচার পাব।

এসআই দেলোয়ার হোসেন তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের তদন্তের কথা স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছুই বলা বা করার নেই। এসবই তকদির। আমার বিরুদ্ধে ডাহা মিথ্যাচার করা হচ্ছে। ভালো কাজ করতে গিয়ে বদনাম নিতে হচ্ছে। এমন মিথ্যা অভিযোগ করে আমার কিছুই করতে পারবে না। তবে দুই-একদিনের মধ্যে আমার বদলি হতে পারে।

এ ব্যাপারে ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ হারুণ অর রশিদ বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশের কথিত সোর্স সোহেল রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে আনা হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম