রাজশাহীর সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবদুল জলিলের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনারকে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে বুধবার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ইমতিয়াজ হোসেন রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে সরেজমিন তদন্ত করবেন।
এজন্য সাবেক ডিসি জলিলের সময় নিয়োগ পাওয়া ছয় কর্মচারীকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া ওই নিয়োগ কমিটির সমন্বয়ক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও উপ-সচিব মুহাম্মদ শরিফুল হককেও যথাসময়ে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
গত ৫ জুন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ রাজশাহীর সাবেক জেলা প্রশাসক আবদুল জলিলের বদলির আদেশ জারি হয়। আবদুল জলিল রাজশাহীতে তার কার্যকালীন প্রায় দুই বছরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ১২২ জনকে নিয়োগ দেন। বদলির আদেশ জারি হওয়ার পরও তিনি আরও ছয়জনকে নিয়োগ দেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ হয়। নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করতে তিনি বদলির পর আরও কিছু সময় ডিসি পদে দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর ২ এপ্রিল পর্যন্ত অফিস করেন ডিসি আবদুল জলিল। বদলির আদেশ হওয়ার পরও তিনি নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করেন বলে অভিযোগ উঠে। গত ২ এপ্রিল সাবেক ডিসি জলিলের শেষ কর্মদিবসে নতুন নিয়োগ পাওয়া ছয় কর্মচারী যোগ দেন।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, যারা নিয়োগ পান তারা ডিসি জলিলের পূর্বপরিচিত। এদের মধ্যে চাকরি পাওয়া রিপন হোসেন ডিসি জলিলের স্ত্রীর গাড়িচালক ছিলেন। আরেক অফিস সহায়ক ফাইম আহম্মেদ ডিসির বাংলোর নাজির নূর আহমেদ টিপুর ভাতিজা।
আরেক অফিস সহায়ক আলী আহাম্মেদ ডিসির কার্যালয়ের ভিপি শাখার অফিস সহকারী মো. মনজুরের ভাতিজা। পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে নিয়োগ পাওয়া অজয় কুমারের বাবা শম্ভু নাথও ডিসির কার্যালয়ের পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কর্মরত আছেন।
অভিযোগ রয়েছে, আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে অনিয়মের মাধ্যমে এদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। এই নিয়োগে চারজন অফিস সহায়কের পদের বিপরীতে ৫২১ জন এবং একটি নিরাপত্তা প্রহরীর বিপরীতে ৩৪ জন ও একটি পরিচ্ছন্নতাকর্মীর পদের বিপরীতে ১৪ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ওই নিয়োগ কমিটির সমন্বয়ক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শরিফুল হক বলেন, ‘আমি অফিসে নেই। চিঠি এলে ডাকফাইলে থাকবে। এখনো দেখিনি।’
তদন্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ইমতিয়াজ হোসেন মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, ‘বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে এ নিয়োগ নিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আমাকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। বুধবার সরেজমিন তদন্ত কাজ শুরু করা হবে।