Logo
Logo
×

সারাদেশ

ছাত্রদলের ২ নেতা হত্যা: বিএনপি নেতা খোকনসহ ৩০ জনের নামে মামলা

Icon

নরসিংদী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৩, ১১:১৭ পিএম

ছাত্রদলের ২ নেতা হত্যা: বিএনপি নেতা খোকনসহ ৩০ জনের নামে মামলা

ফাইল ছবি

নরসিংদীতে সংঘর্ষে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাদেকুর রহমানসহ দুজনকে হত্যার ঘটনায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও তার স্ত্রীসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। এতে অজ্ঞাতনামা আরও ৩৫/৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে।  সাদেকুর রহমানের ভাই আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় এ হত্যা মামলা করেন। 

শনিবার বিকাল ৩টার দিকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর মডেল থানার ওসি আবুল কাশেম। 

এ মামলায় যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসেন বিদ্যুৎসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  তারা হলেন- জেলা যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসেন বিদ্যুৎ, বিএনপি নেতা কামাল হোসেন ও রাসেল। 

মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকনকে। অন্য আসামিরা হলেন- খোকনের স্ত্রী বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ, বিএনপির নেতা জায়দুল ইসলাম জাহিদ, ইলিয়াস আলী ভূইয়া, আল-আমিন, তানভির, রবিউল ইসলাম রবি, সোহেল, সাদ্দাম হোসেন ভূইয়া, মো. ওয়ালিদ হোসেন, রিফাত, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রউফ সরকার রনি, সাইফুল ইসলাম ভূইয়া, শামিম সরকার, শহর যুবদলের আহবায়ক চৌধুরী সুমন, যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসেন বিদ্যুৎ, রুবেল হাসান, চিনিশপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আওলাদ হোসেন মোল্লা, সজিব, নাজমুল ভূইয়া, গোলজার হোসেন, শহিদুজ্জামান, শাকিল চৌধুরী, হানফ সরকার, আল আমিন ওরফে হাদি, ইমাম মেম্বার, বাবুল খন্দকার, রাসেল মিয়া ও কামাল হোসেন ভূইয়া।  এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৩৫/৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার পর থেকে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান ও ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাইনুদ্দিন ভুইয়ার সঙ্গে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ ও সদস্য সচিব রিফাতের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রকাশ্যে নাহিদ ও রিফাতকে সমর্থন দিয়ে আসছেন। কমিটি ঘোষণার পর থেকে পদবঞ্চিতরা নিহত সাদেক ও মাইনুদ্দিনের নেতৃত্বে প্রতিবাদ মিছিল বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলনসহ শান্তিপূর্ণভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি ও আন্দোলন করে আসছিলেন।

এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সাদেক ও মাইনুদ্দিনের নেতৃত্বে পিকআপভ্যান ও ১০০টি মোটরসাইকেল নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতারা। বিক্ষোভ মিছিলটি চিনিশপুর বিএনপির কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছিল। মিছিলটি ভেলানগরপার হয়ে চিনিশপুর সড়কে প্রবেশ করা মাত্রই পূর্বপরিকল্পিতভাবে খায়রুল কবির খোকনের নির্দেশে সন্ত্রাসীরা বিক্ষোভ মিছিলে ককটেল নিক্ষেপ করেন। পরে তারা লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর হামলা করে অনেক নেতাকর্মীকে আহত করে। ওই সময় সন্ত্রাসীরা সাদেকুর রহমানকে ঘেরাও করে তার মাথায় গুলি করেন। এ ঘটনায় আশরাফুল নামে আরও একজনকে গুলি করা হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে জেলা হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সাদেকুর রহমান মারা যায়। এর একদিন পর আশরাফুল মারা যান।

সাদেকুর রহমানের ভাই মামলার বাদী আলতাফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, মামলায় আমি কারো নাম দিইনি। কারণ আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। ঘটনা আমার বাড়ির সামনে ঘটেনি। আমি ওসি স্যারের সঙ্গে কথা বলছি। বলেছি- আপনার তদন্তে যারা পড়ে তাদের নাম দেন। বিনা অপরাধে যেন কেউ মামলায় না পড়ে এই কথা বলে আমি এজহারে সই দিয়ে এসেছি। আমি প্রশাসনের ওপর দায় ভার ছেড়ে দিয়েছি। 

খায়রুল কবির খোকন বলেন, বিএনপিকে দমন করতেই এমন মামলা করা হয়েছে। জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি হওয়ার পর থেকে পুলিশের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ও দলীয় কিছু নেতাদের মদদে তারা আমাদের ওপর একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে। এখন তারা নিজেরা নিজেরাই এসব ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে বলছে।

সদর থানার ওসি আবুল কাশেম জানান, জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও তার স্ত্রী শিরিন সুলতানাসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩৫/৪০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন সাদেকুরের ভাই আলতাফ হোসেন। এ ঘটনায় যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসেন বিদ্যুৎসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হলেও মামলায় কাদের আসামি করা হয়েছে, তা জানেন না বাদী আলতাফ হোসেন। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মামলায় নাম উল্লেখ করেছেন। তবে বাদীর এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সদর থানার ওসি আবুল কাশেম। তিনি জানান, বাদীর সই করা লিখিত এজহারের ভিত্তিতেই মামলায় আসামি করা হয়েছে। এজাহার দেওয়ার পর কেন তিনি জানেন না সেটার জবাব তো আমি দেব না। সে সবাব দেবেন বাদী।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম