জাতীয় গ্রিডের টাওয়ারের চূড়ায় যুবকের লাফালাফি, যেভাবে নামাল ফায়ার সার্ভিস
মহিউদ্দিন মিশু, আখাউড়া
প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৩, ১১:০০ পিএম
বিদ্যুৎ টাওয়ারটি ১৭০ ফুট উঁচু। এটা দিয়ে সঞ্চালিত হয় এক লাখ ৩২ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ। সেই টাওয়ারের চূড়ায় ২৮-৩০ বছরের এক যুবক আল্লাহ-আল্লাহ জিকির করার পাশাপাশি চিল্লাচিল্লি আর এদিক-ওদিক লাফালাফি করছেন। আতঙ্ক নিয়ে নিচ থেকে তা দেখছে শত শত উৎসুক মানুষ। চিৎকার করে লোকজন তাকে নেমে আসার অনুরোধ করছেন।
কিন্তু কে শোনে কার কথা! খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে হ্যান্ডমাইকে তাকে নেমে আসতে আহবান জানান। প্রায় তিন ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীর হ্যান্ডমাইকে আজানের ধ্বনি শুনিয়ে কৌশলে তাকে নিচে নামিয়ে আনতে সক্ষম হন।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা তিতাস সেতু এলাকায়। উদ্ধারকৃত যুবক নিজেকে নাসির উদ্দিন বলে পরিচয় দেয়। তিনি নোয়াখালী জেলার সেনবাগের ইয়ারপুর গ্রামের সিরাজ বাবুর্চির পুত্র। যুবকের হাতে এবং পেটে ব্লেডের কাটা দাগ রয়েছে। তার পড়নে ছিল গোলাপী রংয়ের পায়জামা পাঞ্জাবি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৮টার দিকে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে এক লাখ ৩২ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) বিদ্যুৎ সঞ্চালন (জাতীয় গ্রিড) লাইনের ১৭০ ফুট উঁচু টাওয়ারের মাথায় উঠে বসে আছেন এক যুবক। এ সময় বিদ্যুতের উঁচু টাওয়ারের উপরে বসে জোরে জোরে আল্লাহু আল্লাহ শব্দ করছে। কখনও সে জিকিরের পাশাপাশি চিৎকার চেঁচামেচি করছে। এ সময় সবাই তাকে নেমে আসার অনুরোধ জানালেও সে নামেনি।
আখাউড়া উপজেলা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা মুনিম সারোয়ার বলেন, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। বিদ্যুতের টাওয়ারের উপরে উঠে বসে থাকা যুবককে টাওয়ার থেকে নেমে আসতে হ্যান্ড মাইকে অনুরোধ জানানো হয়। বেলা ১১টার দিকে মোবাইল থেকে হ্যান্ড মাইকে আজানের ধ্বনি শুনালে ওই যুবক টাওয়ার থেকে নেমে আসে।
তিনি আরও বলেন এর আগের দিন বিকালেও ওই যুবক টাওয়ারে উঠেছিল। আমরা তাকে নামিয়ে এনেছি। ২০ দিন আগেও জেলার সদর উপজেলার বরিশাল এলাকায় বিদ্যুতের টাওয়ারে উঠেছিল সে। তার মানসিক সমস্যা রয়েছে বলে তাদের ধারণা।
নাসির উদ্দিন বলেন, জিনে তাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে গাছে উঠায়, টাওয়ারে উঠায়। পানিতে চুবায়। রক্ত খায় মারে, কষ্ট দেয়। আজান দিলে ছেড়ে দেয়। এইডির লাইগা আমি নিজেও শান্তি পাই না। প্রশাসনও শান্তি পায় না।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তিনি এখন শঙ্কামুক্ত।