গাজীপুরে সেনা মোতায়েনে ইসিকে ‘চাপ’ দিতে রাষ্ট্রদূতদের চিঠি জায়েদার
গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৩, ০২:০৫ পিএম
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের জন্য ইসিকে ‘চাপ’ দিতে রাষ্ট্রদূতদের কাছে চিঠি দিয়েছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন।
রোববার যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারের কাছে এই চিঠি দেন তিনি।
চিঠিতে জায়েদা খাতুন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করতে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতেও অনুরোধ জানিয়েছেন।
এর আগে (টেবিল ঘড়ি) প্রতীকের এই প্রার্থী নির্বাচন কমিশন সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, রিটার্নিং অফিসারের কাছে একই দাবিতে চিঠি দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নির্বাচনি মাঠে পাঁচ বার হামলার শিকার হয়েছি। আমার মা একজন নারী এবং রাজপথে একেবারেই নতুন। আর প্রতিপক্ষ পুরোনো অভিজ্ঞ মানুষ। কিন্তু নির্বাচনি মাঠে তিনি জনপ্রিয় নন। তাই আগামী ২৫ মে সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়ে নানা অপকৌশল আটছেন তিনি। পেশিশক্তি দেখাচ্ছেন। বিভিন্ন সংস্থার লোকজন দিয়ে ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন।
২৫ মে অনুষ্ঠেয় গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে লড়তে পারছেন না জাহাঙ্গীর আলম। তার মা জায়েদা খাতুন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোট করছেন। তার পক্ষে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর। দলের সিদ্ধান্ত না মানায় তাকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বহিষ্কারও করেছে।
গাজীপুরে ক্ষমতাসীনরা প্রভাব খাটিয়ে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করবে বলে জাহাঙ্গীরের আশঙ্কা। সেই শঙ্কা প্রকাশের পর এখন কূটনীতিকদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন-২০২৩ পর্যবেক্ষণ করা এবং অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগসহ বেশ কয়েকটি দাবি বাস্তবায়নে নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনুরোধ জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
এছাড়া বিদেশি কূটনীতিকদের দ্বারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য অনুরোধ করা হয়। নির্বাচনী এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরির জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে বলার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
চিঠিতে জায়েদা খাতুন বলেন, আমি জায়েদা খাতুন আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ‘টেবিল ঘড়ি’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। আমি গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলমের মা। আপনারা সবাই অবগত আছেন যে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আমার ছেলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও নির্বাচিত মেয়র অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলমের প্রার্থিতা সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বাতিল করা হয়েছে। আমার ছেলের প্রতি যে অন্যায়-অবিচার করা হয়েছে, তার প্রতিবাদ করতে ও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছি।
তিনি লেখেন, গাজীপুরে আমি আমার নির্বাচনি প্রচারণায় নামলেই লাখো শান্তিপ্রিয় মানুষ আমার প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। আমি ৯ মে প্রতীক পাওয়ার পর থেকে নির্বাচনী আইন অনুযায়ী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থী ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান আমাকে নির্বাচনি এলাকায় প্রচারণায় বাধা দিচ্ছেন, আমার জনসংযোগে হামলা করছেন এবং আমার নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত পোলিং এজেন্ট এবং সম্ভাব্য পোলিং এজেন্টদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছেন। ব্যক্তিগত গুণ্ডা ও প্রশাসনের ছদ্মবেশে বিশেষ পুলিশ পরিচয়ে তাদের ভয় ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।