অবশেষে আসন্ন সিলেটে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন সিটি মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। আগামী নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দিযেছেন তিনি। কেন নির্বাচনে যাচ্ছেন না সেই কারণও স্পষ্ট করেছেন দুবারের এই মেয়র।
শনিবার বিকালে সিলেট রেজিস্ট্রারে মাঠে এক নগরিক সভা করে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানান মেয়র আরিফ।
সিলেটবাসীর উদ্দেশ্যে মেয়র আরিফ বলেন, আমার প্রাণপ্রিয় সম্মানিত সিলেটবাসী আসসালামু আলাইকুম। আজ আমি আবারও আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি, কারণ আপনারাই আমার আপনজন। আপনারাই আমাকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন- আপনাদের ভালোবাসা আর দোয়ার কারণেই আজ আমি এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি। আমার প্রতি আপনাদের ভালোবাসা কতটা তীব্র ও আবেগময় তা গত কয়েকদিনে আমি আরও বেশি উপলদ্ধি করেছি।
আরিফ বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী আমার মাতৃতুল্য পরম শ্রদ্ধাভাজন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মনোনয়ন পেয়ে এবং আপনাদের অভূতপূর্ব ভালোবাসা ও দোয়ার কারণেই অনেক প্রতিবন্ধকতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আমি দুই মেয়াদে মেয়র হিসেবে আপনাদের খেদমত করার সুযোগ পেয়েছি। সুতরাং আপনাদের দেওয়া আমানত সমুন্নত রেখে আমি আবারও আগামী সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব, নাকি করব না তা আপনাদের উপস্থিতিতে জনসম্মুখে প্রকাশ করাই আমার কর্তব্য মনে করেছি। আপনারা যারা অনেক কষ্ট করে আজ এখানে উপস্থিত হয়েছেন তাদের প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ। এছাড়াও মিডিয়ার মাধ্যমে আমি আমার সব নগরবাসী, দেশ ও প্রবাসের সব শুভাকাঙক্ষীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
মেয়র আরিফ বলেন, আপনাদের সামনে আজ আমি খোলামেলা কথা বলতে চাই, কারণ গত কয়েক সপ্তাহ থেকে আমার ওপর যে মানসিক চাপ যাচ্ছে তা আমি ছাড়া আর কেউ উপলব্ধি করতে পারবে না। আজকে আপনাদের বেশি সময় নেব না। যথাসম্ভব স্বল্প সময়ের মধ্যেই আমি আমার কথাগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরব। তবে কথা দিচ্ছি, এই কয়েকদিন যে অশুভ কর্মকাণ্ড করা হয়েছে তা ভবিষ্যতে কোনোদিন সময় ও সুযোগ হলে সবকিছু খোলাসা করব।
তিনি আরও বলেন, প্রিয় নগরবাসী, এই সিলেট রাজনৈতিক সম্প্রীতি ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। সেই সম্প্রীতি সেই সৌহার্দের ধারাবাহিকতায় আমরা অতীতে দেখেছি সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী মরহুম এম সাইফুর রহমান সিলেটের তৎকালীন মেয়র মরহুম বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে অকুণ্ঠ সহযোগিতা করেছেন। একইভাবে আমি দায়িত্ব পালনকালেও সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের আন্তরিক সহযোগিতা পেয়েছি। এমনকি সরকার প্রধান হিসেবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও প্রকাশ্যে সভায় আমার কাজের প্রশংসা করেছেন। এই প্রশংসা নগরবাসীর। এই প্রসঙ্গে একটু বলতে চাই, ইদানীং নির্বাচনকে সামনে রেখে অনেকেই বলছেন, আমি যা করেছি তা অপরিকল্পিত উন্নয়ন, যা নিতান্তই হাস্যকর। কারণ স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী যেখানে কাজের প্রশংসা করেছেন, সেখানে তাদের এরকম বক্তব্য একেবারেই মূল্যহীন ও স্ববিরোধী।
সিটি মেয়র বলেন, আরেকটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন- সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্প বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের অনুমোদনের পর একনেকে অনুমোদিত হয়। শুধু তাই নয়, কর্মসম্পাদন চুক্তিতে টানা কয়েকবার সিলেট সিটি করপোরেশন কাজের মাধ্যমে প্রথম হওয়ার বিরল সম্মান অর্জন করেছে। সুতরাং ঢালাওভাবে এসব মূল্যহীন বক্তব্য যারা দিচ্ছেন তারা আয়নায় নিজেদের মুখ একবার দেখে নেওয়ার অনুরোধ রইল। বাস্তবেই তাদের জ্ঞানের পরিধি কতটুকু তার বিচারের ভার আমি সিলেট নগরবাসীর ওপরই ছেড়ে দিলাম। আমি কতটুকু কী করেছি তা এই শহরের প্রতিটি অলি গলির মানুষ ভালোই জানেন।
তিনি বলেন, আমি আমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর আগে আপনাদের কিছু প্রশ্ন করতে চাই।
আপনারাই বলুন তো এই মুহুর্তে সিলেটে কিংবা পুরো দেশে নির্বাচনি পরিবেশ আছে কী? নাই, নাই। কোনো নির্বাচনি পরিবেশ নাই। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যখন ইভিএমকে না বলে দিয়েছে, বাংলাদেশের আপামর জনগণ যেখানে ইভিএমকে না করছেন, সেই জায়গায় সিলেটে তারা নিয়ে এসেছে ইভিএম। এটা কিসের ইঙ্গিত? এটা আরেকটি ভোট ডাকাতির ইঙ্গিত।
আরিফ বলেন, ইভিএম দিয়ে ডিজিটাল ডাকাতির কথা বাদ দিলাম। আচ্ছা আপনারাই বলুন, নির্বাচনের আর মাত্র মাসখানেক বাকি আছে, আপনারা কী জানেন কীভাবে ইভিএমে ভোট দিতে হয়। নির্বাচন কমিশন যদি চাইত তারা তো ছয় মাস আগে থেকেই ইভিএম দিয়ে ভোট দেওয়ার প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে পারত। তারা তা করেনি। কারণ তারা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় না। তারা এবার চায় ডিজিটাল কায়দায় ভোট ডাকাতি।
নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে আমি একটি চ্যালেঞ্জ দিতে চাই, আপনারা নিরপেক্ষভাবে সিলেটের যেকোনো স্থানে ইভিএমের ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে জরিপ করে দেখুন। দেখবেন ৯৯ ভাগ মানুষই বলবে তারা ইভিএম চায় না। ইভিএম তারা বুঝে না এবং ইভিএমের প্রতি তাদের নূন্যতম আস্থা নেই।
তিনি বলেন, এবার ইভিএম বাদ দিয়ে ভোটাধিকার নিয়ে কথা বলি। ভোট নিয়ে মানুষের আস্থা এমন তলানিতে পৌঁছে গিয়েছে যেকোনো নির্বাচন হলেই মানুষ প্রথমেই সন্দেহ প্রকাশ করে বলে, ভোট দিনে দিতে পারবে নাকি আগের রাতেই শেষ হয়ে যাবে? ভোটাধিকার নিয়ে সাধারণ জনগণের মন থেকে আস্থা তো উঠেই গেছে, এমনকি অনেক আওয়ামী লীগসহ তাদের জোটের নেতাও এখন ভোটের অবস্থা দেখে আড়ালে আবডালে নিজেরাই লজ্জা পান।
আরিফ বলেন, অতীতে সব দুঃসময়ে আপনারা আমার পাশে ছিলেন। আমি যখন মিথ্যা মামলায় কারান্তরীণ ছিলাম তখন বন্দি দশায় আমার অন্তর দিয়ে পুরোমাত্রায় বুঝতে পেরেছি, দলমত নির্বিশেষে নগরবাসী আমাকে কতটুকু ভালোবাসেন, আমার ওপর কতটা আস্থা রেখে মেয়র নির্বাচন করেছিলেন। আমার মুক্তি ও সুস্থতার জন্য আপনারা মসজিদে মন্দিরে, গির্জাসহ সকল উপসনালয়ে প্রার্থনা করেছেন। বক্তব্য বিবৃতি দিয়েছেন। এ সব জেনে আমার চোখের পানি আটকাতে পারিনি। আমি কেঁদেছি, আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করেছি। প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, যদি আবার আপনাদের মাঝে ফিরে আসি তা হলে এই নগর, নগরবাসী এবং মানুষের কল্যাণে আমার জীবন উৎসর্গ করব। আর তাই জেল থেকে বের হওয়ার পর আমি অতীতের সব ষড়যন্ত্র আর অবিচারকে ভুলে গিয়ে শুধুমাত্র সিলেট নগরবাসীর উন্নয়নে নিজেকে সপে দিয়ে রাতদিন কাজ করার চেষ্টা করেছি। কতটুকু সফল হতে পেরেছি জানি না, কিন্তু গত কয়েকদিন আসন্ন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমার অংশগ্রহণ নিয়ে প্রতিদিন দেশ ও বিদেশের অগণিত শুভাকাঙক্ষীদের একের পর এক ফোন, একের পর এক বার্তা আমার এই ছোট্ট জীবনের বড় প্রাপ্তি। এই কয়েকদিন আমি যেদিকেই গিয়েছি সেদিকেই সব বয়সী মানুষ আমার সামনে এসে তাদের মনের আকুতি তুলে ধরেছেন, হয়তো অনেককে আমি ভালো করে চিনি-না,জানি-না, এরকম অপরিচিত মানুষও আমাকে এসে আপনজনের মতো এসে জড়িয়ে ধরেছেন, আগামী নির্বাচনে আমার অংশগ্রহণ নিয়ে তাদের জোরালো আবদার করছেন, যা আমার মনে অন্যরকম এক অনুভূতির জন্ম দিয়েছে।
তিনি বলেন, মাঝে মাঝে এমনও হয়েছে, নির্বাচনি পরিবেশ নিয়ে চরম হতাশা প্রকাশ করে অনেকের কাছে যখন আমি নির্বাচন করব না বলে আমার প্রাথমিক মনোভাব প্রকাশ করেছি, তখন তারা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন। আমি দেখেছি বিষণ্নতায় মুষড়ে পড়ছেন অনেকে। এই যে হাজার হাজার, লাখ লাখ মানুষের যে আবেগ-যে অনুভূতি, তা ভাষায় প্রকাশের যোগ্যতা আমার মতো একজন ক্ষুদ্র মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।
আরিফ বলেন, হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান মনিপুরী সম্প্রদায়সহ ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে আমজনতার এই নি:স্বার্থ ভালোবাসাই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। কথা দিচ্ছি, মেয়র না থাকলেও নগরবাসীর ঋণ শোধ করার তাগিদে সিলেটের সব কল্যাণমূলক কাজে এবং আপনাদের সুখে দুখে সবসময় পাশে থাকব।
তিনি বলেন, মৃত্যুর মাত্র কয়েকদিন আগে সিলেট সফরকালে সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমান বলেছিলেন, সিলেটবাসীর মায়া ও মমতা নিয়েই তিনি মরতে চান। সবার ভালোবাসার মধ্য দিয়ে-সবাইকে কাঁদিয়েই তিনি চিরবিদায় নিয়েছিলেন। আমাকেও একদিন আমার রবের কাছে ফিরে যেতে হবে। সবাই শুধু দোয়া করবেন, আমিও যেন সিলেটবাসীর মায়া ও মমতার নিয়েই চিরবিদায় নিয়ে নিতে পারি।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই ব্লু প্রিন্ট রেডি হয়ে গেছে। কীভাবে ভোট ডাকাতি করা যায় তার নীল নকশার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে পুলিশ প্রশাসনে রদবদল সম্পন্ন হয়েছে। কিছু সংখ্যক আজ্ঞাবহ পুলিশ বাহিনী ও কর্মকর্তাদের যোগসাজশে আরেকটি প্রহসনের নির্বাচনের জন্য যেসব উপকরণ দরকার তার সবটুকুই এখন বিদ্যমান। শুধু তাই নয়, এখনো আমি মনোনয়ন কিনিনি, নির্বাচন করব নাকি করব না সেই সিদ্ধান্ত জানাইনি, কিন্তু তার আগেই আমার নেতাকর্মী ও শুভাকাঙক্ষীদের একের পর এক মিথ্যা ও সাজানো মামলায় গ্রেফতার করা হচ্ছে, এমনকি অনেককে রিমান্ডে পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। বাসাবাড়ীতে অভিযান চালানো হচ্ছে, হুমকি ভয়ভীতি দেওয়া হচ্ছে। এটাই কী তাদের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনি পরিবেশের নমুনা? আমার দলের নিরীহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সকল অপতৎপরতা অনতিবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানাই এবং বন্দিদের নি:শর্ত মুক্তির দাবি করছি। আপনারা জানেন, আমি ছাত্রাবস্থায় থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির একজন কর্মী হিসেবে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি এবং আমৃত্যু থাকব, এটাই হবে আমার জীবনের শেষ রাজনৈতিক ঠিকানা ৷
তিনি বলেন, বারবার নির্বাচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী আপষহীন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি আপনাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এই দাবি আজ গ্রামে গঞ্জে, শহরে-শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। এই দাবি আজ জনতার দাবিতে রূপ নিয়েছে। আমি জানি, অতীতে যেভাবে দুই দুইবার আপনারা আমাকে নির্বাচিত করেছেন এবারও আমার কাজের মূল্যায়ন করে আমাকে ভোট দিতে দলে দলে আপনারা ভোটকেন্দ্রে যাবেন। কিন্তু একবার ভেবে দেখুনতো, আপনাদের দেওয়া ভোট কী যথাযথভাবে কাউন্ট হবে?
নির্বাচন না করার কারণ হিসেবে আরিফ আরও বলেন, আপনারা দেবেন এক মার্কায়, কিন্তু ভোট চলে যাবে অন্য জায়গায়। অর্থাৎ আপনাদের দেওয়া ভোট, আপনাদের দেওয়া রায় অন্ধকারে হারিয়ে যাবে। বিএনপি আমার রক্তে রন্ধ্রে অস্থি মজ্জায়। আমি আপনাদের আরিফ, বিএনপির আরিফ হয়ে অন্ধকারের গহীনে ফেলতে পারি না দেশবাসীকে। স্পষ্টত এই নির্বাচন হবে প্রহসনের নির্বাচন। সুতরাং এই প্রহসনের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো প্রশ্নই উঠে না- তাই আমার দলীয় এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ একমত।
আরিফ বলেন, যাদের পরামর্শ আমি অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করি, আমার মাতৃতুল্য পরম শ্রদ্ধাভাজন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং আগামীর রাষ্ট্রনায়ক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এবং আমার মা জননী ও আমার মুর্শিদ বারণ করেছেন এমন প্রহসনের নির্বাচন থেকে বিরত থাকতে। আজ সিলেটের অলিতে গলিতে নানা প্রান্তে লাখো জনতা; যারা আমি নির্বাচন করব বলে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে ছিলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বারবার অনুরোধ জানিয়ে আসছেন, সেইসব লাখো জনতার সিদ্ধান্তকে আমি সম্মান জানাচ্ছি, কিন্তু এবার আপনারা সবাই আমাকে দয়া করে ক্ষমা করবেন। তদুপরি দেশ রক্ষার আন্দোলনে শহিদ হওয়া সহযোদ্ধাদের রক্তের ফোটাকে পদদলিত করে আমি কখনোই সেই পথ মাড়াবো না। আমি খুন, গুম হওয়া সেই সব সহযোদ্ধাদের আত্মত্যাগকে জলাঞ্জলি দিয়ে রক্তের সাগরে হাওয়া খেতে পারি না। আর তাই আপনাদের ভোটাধিকার আদায় তথা গণতন্ত্র এবং দেশকে রক্ষার স্বার্থে এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আগামীর রাষ্ট্রনায়ক দেশনায়ক তারেক রহমানের পরামর্শে এবং দলের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্পূর্ণ একমত পোষণ করে দলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী হিসেবে এই প্রহসনের নির্বাচন থেকে আমি সরে দাঁড়ালাম। একইসঙ্গে আমি সিলেট মহানগরসহ সারাদেশে বিএনপি সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ সব দেশপ্রেমিক সর্বস্তরের নাগরিককে এই সরকারের অধীনে কোনো ধরনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন।