অবশেষে ৮০৩ দিন পর দেশের মাটিতে এলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, কিংবদন্তি অভিনেতা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। তবে জীবিত নয়, মৃত।
২০২১ সালের ৪ মার্চ সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন উন্নত চিকিৎসার জন্য। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সেখানে চিকিৎসা করিয়েছেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। তার মৃতদেহ নিয়েই দেশের মাটিতে ফিরেছেন স্বজনরা। ১৫ মে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে সিঙ্গাপুর থেকে একটি ফ্লাইটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার মরদেহ আসে। সেখান থেকে নেওয়া হয় তার উত্তরার বাসভবনে। এরপর সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।
এ সময় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে ফারুককে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীসহ নানা পেশার মানুষ ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
শহীদ মিনারে শুরুতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পক্ষে লে. কর্নেল সৈয়দ মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে শ্রদ্ধা জানান তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষে শ্রদ্ধা জানান সংসদ সচিবালয়ের সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস এম এম নাঈম রহমান।
আওয়ামী লীগের পক্ষে দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলের নেতারা ফারুকের মরদেহে শ্রদ্ধা জানান।
এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান, মহানগর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনসহ নানা রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফারুককে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে উপস্থিত ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন, ফেরদৌস, মিশা সওদাগর, নিপুণ, জায়েদ খানসহ আরও অনেকে।
শহীদ মিনারের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ফারুকের মরদেহ নেওয়া হয় তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল এফডিসিতে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা (সিঙ্গাপুরে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়) শেষে তাকে শেষবারের মতো বিদায় জানান সহকর্মী শিল্পী, নির্মাতা, প্রযোজক ও কলাকুশলীরা। এরপর চ্যানেল আই প্রাঙ্গনে ফারুকের তৃতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
বিকালে গুলশানের আজাদ মসজিদে তার আরও একটি জানাজা শেষে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ফারুকের গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের কালীগঞ্জে। রাত ৯টার পর সেখানকার পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হন এই কিংবদন্তি।