প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, আদালত চত্বরে যারা বিচার পাবার আশায় আসেন তাদের পয়সায় আপনার আমার বেতন হয়। তারা যেন সুবিচার পায় সে বিষয়ে বিচার বিভাগে সংশ্লিষ্ট সবার খেয়াল রাখা উচিত। বিচারকরা একটি জিনিস মনে রাখবেন, বিচার কোনো বিক্রির জিনিস নয়। বিচার প্রার্থীদের ন্যায়বিচার পাওয়া সাংবিধানিক অধিকার।
বুধবার বিকালে জেলা আইনজীবী (বার) ভবনে জেলার সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কর্মকর্তা ও আইনজীবীদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক অভিভাষণে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং জেলা আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিতব্য ছায়াকুঞ্জের প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন ও নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন।
বিচার বিভাগের সব কর্মকাণ্ডে বিচারক ও আইনজীবীরা একই সুতোয় গাঁথা মালা উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনারা মনে রাখবেন বিচার যদি একটি পাখি হয় তবে বিচারকরা সেই পাখির একটি ডানা এবং আইনজীবীরা আরেকটি ডানা। এ দুইটি ডানা যদি সমান তালে না ঝাপটাতে পারে তবে সেই পাখিটি উড়তে পারে না। ঠিক একইভাবে আপনাদের মধ্যে যদি সমন্বয় না থাকে তবে সাধারণ মানুষের ন্যায় বিচার পেতে বেশ বেগ পেতে হবে ও দীর্ঘ মামলাজট দেখা দেবে।
তিনি আইনজীবীদের প্রতি আদালত বর্জন না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমার কোনো বিচারক যদি অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন, কিংবা তিনি যদি তার দায়িত্বের গাফলতি করেন তবে আপনারা আমাকে এবং সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টারদের জানাবেন। আপনাদের জন্য আমার দরজা সব সময় খোলা। একটি জিনিস মনে রাখবেন বিচার বিক্রির জিনিস নয়। যদি কোনো বিচারক বিচার বেচা-কেনা করেন তবে আমি তাকে তার পদ থেকে অপসারণ করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করব না, এমনকি তার বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। আপনারা আইনজীবীরা আদালত বর্জনের মতো সিদ্ধান্ত নেবেন না, এতে বিচারিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয় এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা কমে যায়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রাব্বানী, উচ্চ আদালতের রেজিস্টার মুন্সি মশিয়ার রহমান, জেলা ও দায়রা জজ আস সামছ জগলুল হোসেন, নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন আদালতের বিচারক, জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, আইনজীবী সমিতির সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক মুন্সি মোহসীন মিঞা প্রমুখ।