বিসিসি নির্বাচন
বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন দাবি জাতীয় পার্টির
বরিশাল ব্যুরো
প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৫২ এএম
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে ইভিএম বাদ দিয়ে ব্যালটে ভোটগ্রহণ ও সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস।
তিনি শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবির কথা তুলে ধরেন।
এ সময় লিখিত বক্তব্যে প্রকৌশলী ইকবাল বলেন, বিগত নির্বাচনগুলোতে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত না হওয়ায় সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়নি এবং ভোটাররা ভোট দিতে পারেননি। যার কারণে বিএনপিসহ অনেক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়েছে।
আমরা এ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে আমরা কিছু দাবি ও প্রস্তাব পেশ করছি।
তিনি বলেন, প্রথমত আমরা ইভিএমে (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) নির্বাচন চাই না, ব্যালট পেপারে নির্বাচন চাই। দ্বিতীয়ত বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও যথাযথ ক্ষমতা প্রদান করে নিরপেক্ষ নির্বাচন গ্রহণের পরিবেশ সৃষ্টি করা হোক। যাতে ভোটাররা নির্ভয়ে কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে পারেন।
এ সময় তিনি ইভিএম সম্পর্কে বলেন, ইভিএমের অংশ মূলত দুটি। একটি হার্ডওয়্যার। দ্বিতীয় অংশ সফটওয়্যার। যেহেতু ইভিএমে ব্যবহৃত সফটওয়্যারের ওপর নির্বাচনের ফলাফল নির্ভর করে তাই এ অংশের নিয়ন্ত্রণ যার হাতে থাকবে তার পক্ষে ফলাফল প্রভাবিত করা অত্যন্ত সহজ বলে আমি মনে করি।
এছাড়া জনগণ ইভিএম ব্যবহারে অভ্যস্ত না থাকার কারণে ভোট প্রদানে ধীরগতি, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে বয়স্কসহ অনেকেই ভোট না দিয়ে ফিরে যান। প্রযুক্তিগতভাবে ইভিএম একটি দুর্বল যন্ত্র। এতে ভোটার ভেরিফাইড পেপার অডিট ট্রেইল নেই। যার ফলে কমিশন ভোটের যে ফলাফল ঘোষণা করবে তা চূড়ান্ত হিসাবে গ্রহণ করতে হবে এবং এটি স্বচ্ছভাবে পুনঃগণনা বা নিরীক্ষা করার সুযোগ থাকে না।
তিনি বলেন, প্রযুক্তির কারণে ইভিএম ব্যবহার করে ডিজিটাল জালিয়াতিও করা যায়। এছাড়া নির্বাচনের সময় মাঠপর্যায়ে নিয়োজিত কারিগরি টিমও নির্বাচনি ফলাফল বদলে দিতে পারে। গত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অন্তত দুবার ফলাফল প্রকাশের অভিযোগ উঠেছে, যা কেবল ডিজিটাল জালিয়াতির মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। এছাড়া অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, ইভিএম ব্যবহার করার কারণে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
এ বাস্তব কারণে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয়ভাবে ইভিএমে ভোট গ্রহণ না করার আহ্বান জানিয়ে আসছে। তাপস বলেন, যেহেতু জনমনে ইভিএম নিয়ে আস্থাহীনতা আছে, আগে সেটি দূর করতে হবে। অনেক দেশ ইভিএম থেকে সরে এসেছে। বাংলাদেশের মতো দেশে কাগজের ব্যালটে প্রচলিত পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করাই সর্বোত্তম। তাই আমাদের দাবি, ব্যালট পেপারেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হবে।
এছাড়া আমরা দেখে এসেছি, সেনাবাহিনীর প্রতি দেশের মানুষের গভীর আস্থা। তাই ভোটারদের ভীতি দূর করতে, ভোটকেন্দ্র দখল, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং সব ধরনের অরাজক পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন অত্যন্ত জরুরি। আমরা চাই, এ দাবিগুলো মেনে নিয়ে নির্বাচন কমিশন একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করবে অর্থাৎ নির্বাচন ও ভোট প্রদানে পূর্ব থেকেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টি বরিশাল মহানগরের আহ্বায়ক মহসিন উল ইসলাম হাবুল, আক্তার হোসেন সপ্রু, কামরুজ্জামান চৌধুরী প্রমুখ।