রংপুরের কাউনিয়ায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির অনুষ্ঠানে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের কর্মী সোনা মিয়াকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আজমল হোসেন দুলু নামের আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার রাতে রংপুর মহানগরীর কামারপাড়া ঢাকা কোচস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আজমল হোসেন দুলু কাউনিয়া উপজেলার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। এ নিয়ে সোনা মিয়া হত্যা মামলায় আটজনকে জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত ২৪ এপ্রিল বিকালে কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করতে উপজেলার খানসামারহাটের ইমামগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে যান বাণিজ্যমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য টিপু মুনশি। মন্ত্রী মাঠে এলে নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিতে থাকেন।
এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়া ও ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক গ্রুপের মধ্যে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে মতবিনিময় সভা না করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি চলে যান।
ওই দিন রাত ৮টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে সোনা মিয়া নিহত হন। সোনা মিয়া উপজেলার হারাগাছের নাজিরদহ এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে। তিনি হারাগাছ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য এবং কাউনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়ার অনুসারী বলে জানা যায়।
এ ঘটনার নেপথ্যে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজেদ আলী বাবুলের মদদ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কাউনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান।
জেলার ওই নেতার মদদে কাউনিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক ও তার ভাই স্থানীয় হারাগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা রাজু আহমেদ পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের কর্মী সোনা মিয়াকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। যদিও দলীয় কর্মীকে হত্যাসহ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মদদ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজেদ আলী বাবুল।
এদিকে সোনা মিয়া হত্যার ঘটনায় ৭৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাত ১৫-২০ জন আসামি করা হয়েছে। নিহত সোনা মিয়ার ছেলে আখতারুজ্জামান সোহেল বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
এ ব্যাপারে রংপুর জেলা পুলিশ সুপারের মুখপাত্র (মিডিয়া) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ইফতে খায়ের আলম যুগান্তরকে জানিয়েছেন, সোনা মিয়া হত্যাকাণ্ডে শনিবার সকাল পর্যন্ত ৮ জন এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।