কসাইয়ের মতো টুকরো করে মমতাজকে হত্যা করা হয়
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৩, ১০:২২ পিএম
লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের স্টাফ কোয়ার্টার থেকে মমতাজ বেগম নামে এক নারীর বিবস্ত্র ও খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মমতাজকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। কসাই যেভাবে মাংস কাটে, সেভাবে তার দুই হাত ও দুই পা কাটা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মাহফুজ্জামান আশরাফ ঘটনাটি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
তবে নিহত মমতাজের ছোট ছেলে সাইফুল ইসলাম রকিকে খুঁজে পেলে হত্যার রহস্য উদঘাটন হবে বলে জানায় এসপি।
এসপি আরও জানান, স্টাফ কোয়ার্টারটিতে রক্ত দেখা গেছে বলে রাতে ৯৯৯ এ কল আসে। এতে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি টিম ঘটনাস্থল আসে। বাসার সামনের দরজা বন্ধ ছিল। এতে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পেছনের দরজা দিয়ে বাসায় ঢুকে পুলিশ। ঢুকতে মাংসের টুকরো পড়ে ছিল। তখনও বুঝা যায়নি সেটি কিসের মাংস ছিল। পরে একটি পাটি দিয়ে ঢাকা অবস্থায় মমতাজের বেগমের শরীরের কাটা অংশ দেখতে পাওয়া যায়। তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। কসাই যেভাবে মাংস কাটে, সেভাবে তার দুই হাত ও দুই পা কাটা হয়েছে। এটি বীভৎস দৃশ্য ছিল।
মমতাজের বড় ছেলে শরীফুল ইসলাম বাপ্পীসহ স্থানীয়দের বরাত দিয়ে এসপি জানান, চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন কুশাখালী গ্রামের বাড়িতে মমতাজ ও তার বড় ছেলে বাপ্পী ঈদ করতে যায়। কিন্তু ছোট ছেলে রকি সেখানে ঈদ করতে যায়নি। সে এ কোয়ার্টারেই ছিল তিনদিন ধরে। ছোট ছেলের সঙ্গে মমতাজের মনোমালিন্য ছিল। সোমবার সকাল ১০-১১ টার দিকে বড় ছেলে বাপ্পী তার মাকে বাসে উঠিয়ে দেয় এখানে আসার জন্য। কিন্তু তখন বড় ছেলে আসেনি। এখানে ছোট ছেলে ছিল।
এসপি জানান, মমতাজ এখানে আসার পরই ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার ছোট ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মোবাইলটিও বন্ধ রয়েছে। বাপ্পীও তার ছোট ভাইয়ের সন্ধান দিতে পারেনি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কি কারণে হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে, কারা ঘটিয়েছে। অচিরেই তা বের হয়ে আসবে। মমতাজের দুই মেয়ে আছে, তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে। তার ছোট ছেলেকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। তাকে খুঁজে পেলে রহস্যের উদঘাটন হবে।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ বি ছিদ্দিক ও মংনেথোয়াই মারমা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ জানায়, নিহত মমতাজ বেগম লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা কুশাখালী ইউনিয়নের মৃত আব্দুল মতিনের স্ত্রী। তার স্বামী সড়ক বিভাগে চাকরি করতেন। স্বামী মতিন মারা যাওয়ার পর থেকেই মমতাজ তার দুই ছেলে বাপ্পি ও রকিকে নিয়ে সড়ক বিভাগের স্টাফ কোয়ার্টারে বসবাস করে আসছেন। তার বড় ছেলে বাপ্পি বর্তমানে মাস্টার রোলে সড়ক বিভাগে কাজ করছে।