সাবেক স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ নদীতে ডুবালেন স্বামী
কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১০:০৮ পিএম
টাকা আত্মসাৎ ও পরকীয়ার পর অন্যকে বিয়ে করার জেরে সাবেক স্ত্রীকে খুন এবং লাশ যমুনা নদীতে ডুবিয়ে দেওয়ার মতো চাঞ্চল্যকর ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাজীপুর। ঘটনার প্রায় তিন মাস পর রহস্য উম্মোচন করতে পেরেছে পিবিআই। এতে ভুক্তভোগীর সাবেক স্বামী ও বড় ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
আসামিরা শুক্রবার বিকালে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার কারণ ও নিজেদের দায় স্বীকার করেছেন। শনিবার সকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান।
আসামিরা হলেন ভুক্তোভোগীর প্রথম স্বামী মো. মোজাম্মেল হক (৩২) ও তার বড় ভাই মো. জহির আলী (৩৯)। তারা জামালপুরের মাদারগঞ্জের হিদাগারী গ্রামের মৃত সোহরাব প্রামাণিকের ছেলে। হত্যার শিকার নারীর নাম জনি আক্তার রুপা (২০)। তিনি মাদারগঞ্জের ফাজিলপুর গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে।
পুলিশ সুপার মাকছুদের জানান, ২০১৫ সালে মোজাম্মেল ও রুপার বিয়ে হয়। তাদের দুটি সন্তান আছে। মোজাম্মেল ২০১৯ সালে মালেশিয়া যান। সেখানে থাকাকালীন চার বছর শাশুড়ির ব্যাংক হিসাবে প্রায় নয় লাখ টাকা পাঠিয়েছিলেন তিনি। দেশে আসার পর মোজাম্মেল সে টাকা ফেরত পাননি। মাত্র দুই লাখ বিশ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয় তাকে। এছাড়া মোজাম্মেল জানতে পারেন রুপা ননদের সতিনের ছেলে মো. উজ্জল মিয়ার সঙ্গে পরকীয়া ও বিয়ে করেছেন। দুই সন্তানকে রেখে গাজীপুরের কালীগঞ্জের বালিগাঁও গ্রামে বসবাস করছেন উজ্জলের সঙ্গে।
তিনি আরো জানান, ৬ জানুয়ারি বিকালে রুপা মাদারগঞ্জে যান। তাকে বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি যমুনা নদীর চরে এক বন্ধুর বাসায় আলোচনার কথা বলে নিয়ে যান মোজাম্মেল। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মোজাম্মেল ও জহির রুপাকে নদীর চরে নিয়ে ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে মোজাম্মেল দা দিয়ে জবাই করে লাশ বালিভর্তি বস্তায় ভরে যমুনা নদীর গভীর পানিতে ফেলে দেন।
ঘটনার পর উজ্জল গাজীপুরের কালিগঞ্জ থানায় ২৪ জানুয়ারি সাধারণ ডায়েরি করেন। পিবিআই ঘটনার ২ মাস ২৪ দিন পর প্রাথমিকভাবে রুপাকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে সাক্ষ্য প্রমাণ পায়। পরে রুপার দ্বিতীয় স্বামী বাদী হয়ে ২৯ মার্চ কালীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।