যেখানে মিলবে ৮০ টাকা কেজিতে মাছ ৬০০ টাকায় গরুর মাংস
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৩, ১১:০১ পিএম
পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে মাসব্যাপী স্বল্পমূল্যে মাছ ও মাংস বিক্রির উদ্যোগে নিয়েছে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক। বর্তমানে প্রতি কেজি মাছ ৮০ টাকা ও গরুর মাংস ছয়শ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় জেলার ৭২টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌরসভায় স্বল্প আয়ের মানুষরে জন্য পর্যায়ক্রমে এ বিক্রি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কর্তৃক মূল্য সমন্বয়পূর্বক নিম্নআয়ের মানুষদের মধ্যে ৮০ টাকা কেজি দরে কার্প মাছ ও ছয়শ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মিনহাজুল ইসলাম।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেদুল হাসান, কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি রাজু মোস্তাফিজ, সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক ফারুক, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ইসমত আরা, যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল গফুর ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
সত্তরোর্ধ্ব দিনমজুর দেলোয়ার হোসেন জানান, রমজান মাসের এই এক সপ্তাহে মাত্র একদিন একশ টাকা দিয়ে ছোট্ট বৈরালী মাছ এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) কিনে পরিবারের সাতজন সদস্য খেয়েছিলেন। আজ ভীষণ খুশি মাত্র ৮০ টাকায় এক কেজি মাছ কিনে পরিবারের মানুষদের মুখে একটু বড় মাছের স্বাদ তুলে দিতে পারবেন।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদের পাড়ের যাত্রাপুর ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার ও গঙ্গাধর নদ-নদী প্রবাহিত। ১৪-১৫টি চর রয়েছে এখানে।
স্থানীয়রা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে ব্রয়লার মুরগি, মাছ, মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। মাছ ও মাংস কেনা অনেকের সাধ্যের বাহিরে চলে গেছে।
কুড়িগ্রাম জেলার স্বল্প আয়ের মানুষরা যাতে এ রমজান মাসে একটু মাছ ও মাংস খেতে পারেন তাই এ উদ্যোগ নিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহম্মদ সাইদুল আরীফ। জেলার প্রতিটি উপজেলায় প্রত্যন্ত এলাকায় স্বল্প আয়ের প্রায় কয়েকশ মানুষদের জন্য এই মাছ ও মাংসের বিক্রির ব্যবস্থা করেছেন পুরো রমজান মাসে।
গোয়ালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রাসেদুল হক জানান, জেলা প্রশাসনের কম দামে মাছ ও মাংস বিক্রির এই কার্যক্রম দারুণ সাড়া পড়েছে তাদের পুরো ইউনিয়নে।
চর যাত্রাপুর গ্রামের জাহেরা খাতুন জানান, এক কেজি সিলভার কার্প কিনেছেন মাত্র ৮০ টাকায়। অথচ বাজারে এসব মাছের দাম প্রতি কেজি ১৭০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর গরুর মাংস কেজিপ্রতি বিক্রি হয় ৭০০ টাকা থেকে ৭২০ টাকা দরে।
যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল গফুর জানান, রমজান মাস উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে গরিব ও অসহায় মানুষের মাঝে ৮০ টাকা কেজি দরে মাছ ও ছয়শ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রির উদ্যোগে তার এলাকার স্বল্প আয়ের মানুষরা দারুণ খুশি। আগামীতে ব্রয়লার মুরগির মাংস বিক্রির উদ্যোগ নিলে আরও ভালো হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, কুড়িগ্রাম জেলার স্বল্প আয়ের মানুষরাও যেন রমজান মাসে একটু কম দামে মাছ মাংস খেতে পারেন তার জন্য এ ব্যবস্থা। সব উপজেলায় পর্যায়ক্রমে স্বল্প দামে মাছ ও মাংস বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে।