Logo
Logo
×

সারাদেশ

তিস্তায় পানি বৃদ্ধি, মৎস্যজীবীরা খুশি হলেও কপাল পুড়েছে কৃষকের

Icon

নীলফামারী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৩, ১০:২২ পিএম

তিস্তায় পানি বৃদ্ধি, মৎস্যজীবীরা খুশি হলেও কপাল পুড়েছে কৃষকের

তিস্তা নদীতে আকস্মিক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে তিস্তাপাড়ের মৎস্যজীবীরা খুশি হলেও কপাল পুড়েছে কৃষকদের। দুদিন আগেও তিস্তা পারের মৎস্যজীবীরা পানির জন্য হাহাকার করছিল। তিস্তার নদীগর্ভে ছিল ধু-ধু বালু চর। তিস্তাপাড়ে গেলে মনে হতো এ যেন এক মরুভূমি।

নদীতে পানি আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় রংপুর অঞ্চলের ৪৯ হাজার হেক্টর জমি সেচ প্রকল্পের বাইরে রয়েছে। চলিত মৌসুমে দুদিন আগে পানি ছিল ১ দশমিক ৫ থেকে ৩ হাজার কিউসেক। অথচ শুষ্ক মৌসুমে বোরো সেচ প্রকল্পে ২০-২৫ হাজার কিউসেক পানির প্রয়োজন।

সরেজমিন দেখা গেছে, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজের উজানে কালিগঞ্জ, জুয়ারচর, কিছামত ছাতনাই, টাপুরচর, চরখড়িবাড়ী ও পূর্ব খড়িবাড়ীসহ প্রায় ১৫টি চরে সোমবার থেকে হঠাৎ পানি বৃদ্ধির ফলে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। পানি আসার কারণে তলিয়ে গেছে ক্ষেতের গম, ভুট্টা, বাদাম, তিল, তিষিসহ অন্যান্য ফসল। ভাঙছে নদীর দুই তীর, ফলে আধা পাকা, অপরিপূর্ণ গম, পেঁয়াজ, তিল, তিষি ও ভুট্টাসহ রবিশস্য তুলে আনতে হচ্ছে কৃষককে।

মারুফা নামে এক নারী কৃষক জানান, কয়েক দিন আগে পানি লাগে তখন নদীতে পানি নাই। কয়েক দিন পরেই পেঁয়াজ তুলব এখন দিল পানি। একহাঁটু পানির তল থেকে পেঁয়াজ তুলতে হচ্ছে। বেশি ভাগ জমির পেঁয়াজ পানির তলে, যে গুলো হাতের কাছে পেয়েছি সেগুলো তুলতে পেয়েছি। গমগুলো আধপাকা কাটলাম, এতে এবারে আবাদে লস, বীজের দামে উঠবে না।

গোলাম রব্বানী নামে এক কৃষক জানান, আড়াই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ লাগিয়েছি। তার মধ্যে ৬ শতক জমির আবাদ তুলতে পেয়েছি। অপরিপূর্ণ গম কাটলাম, এবার অপরপিক্ক পেঁয়াজ তুলতে হচ্ছে। ২ দশমিক ৫ কেজি পেঁয়াজের বীজ নিছে ৯ হাজার টাকা, সার, পানি, শ্রম তো আছেই সবেই লস। এবার চাষাবাদ করে সেগুলো গচ্চা যাবে।

খতেজা বেগম নামের আরেক নারী কৃষক জানান, যেমন করে পানি আসলো না তুলি কি করো, সব গুলায় তো গচ্চা গেইছে, এগিলা নিগি তো খাইবার পাইম, না হইলে তো সগেই যাইবে নদীত।

মৎস্যজীবী মজিবুল ইসলাম জানান, হঠাৎ তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা খুশি হয়েছি। দীর্ঘদিন নদীতে পানি না থাকায় মাছ শিকার থেকে বঞ্চিত হই। পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছি।

টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ময়নুল হক জানান, হঠাৎ করে নদী পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে। এতে কৃষকের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। এ বিষয়ে কৃষি অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলেছি।

উপজেলা কৃষি অফিসার সেকেন্দার আলী জানান, নদী অববাহিকা জমিতে এখন যেসব ফসল কৃষকরা বাড়তি লাভের আশায় আবাদ করেছে তাদেরকে আমরা আগাম সতর্কবাণী দিয়েছি। তিস্তায় হটাৎ পানি বৃদ্ধিতে তারা তো ক্ষতিগ্রস্ত তো হবেই। ক্ষতি হওয়ার তথ্য আমাদের কাছে নেই।

এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌল্লা প্রিন্স জানান, প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে দুই-একদিনের মধ্যে পানি নেমে যাবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম