ঝিনাইদহে তিন শিশুকে পুড়িয়ে হত্যা একমাত্র আসামির মৃত্যুদণ্ড
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৩, ১০:৫৬ পিএম
ছবি : যুগান্তর
ঝিনাইদহে ৩ শিশুকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার রায়ে একমাত্র আসামি ইকবাল হোসেনকে মৃত্যুদণ্ডসহ তিন লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নাজিমুদ্দৌলা এ দণ্ডাদেশ দেন। তবে আসামি পলাতক রয়েছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, শৈলকুপা উপজেলা শহরের কবিরপুর গ্রামের গোলাম নবীর ছেলে দণ্ডিত ইকবাল হোসেন। টাকা লেনদেন নিয়ে বিরোধের জেরে ২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ইকবাল কার্টুন দেখানোর কথা বলে আপন ভাতিজা সাফিন ও আমিন এবং ভাগ্নে মাহিনকে নিজ ঘরে ডেকে নেয়। এরপর তাদের হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে গ্যাসের সিলিন্ডার খুলে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ঘটনাস্থলেই সাফিন ও আমিনের মির্মম মৃত্যু ঘটে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভাগ্নে মাহিনও পরে মারা যায়। শৈলকুপা থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। পুলিশ ইকবালকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয়। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত একমাত্র আসামি ইকবালকে মৃত্যুদণ্ড ও ৩ লাখ টাকা জরিমানা করেন।
২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি রাত অনুমান ৭টার দিকে উপজেলা শহরের কবিরপুর গ্রামের মসজিদের সামনের একটি পাকা বাড়িতে তাদের নির্মমভাবে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ইকবাল হোসেনকে (৪২) ঘটনার পরপরই এলাকাবাসী ধরে পুলিশে সোপর্দ করেন।
রায় ঘোষণার আগেই ইকবাল হোসেন দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে। তাকে দেশে ফেরৎ এনে আদালতের রায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন নিহতের স্বজনরা। এ রায় কাযর্করের দাবিতে রাস্তায় নামেন স্বজনরাও।
বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট মেরিন টেকনোলজি নারয়ণগঞ্জ থেকে ২০০৬ সালে ডিপ্লোমা পাশ করেন ইকবাল হোসেন (৪২)। এর আগে তিনি শৈলকুপা পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে। ডিপ্লোমা পাশ করেই সিঙ্গাপুর চাকরি নিয়ে চলে যান।
দেশে ফিরে আসেন ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে। স্থানীয় থানার সমানের সার ব্যবসায়ী গোলাম নবীর দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে ইকবাল বড় ছেলে। বিদেশ থেকে বাবার অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠান তিনি। সেই টাকা নিয়েই বাবা ও ছোট ভাই দেলোয়ারের সঙ্গে বিরোধ বাধে।
স্ত্রী কামনীর প্ররোচনায় প্রতিশোধের নেশায় পেয়ে বসে তাকে। এ নৃশংস শিশু হত্যায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। নির্মম এ হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির ফাঁসির দাবিতে সারা দেশে আন্দোলন শুরু হয়।