স্বপ্নপুরী ভ্রমণে গিয়ে হামলার শিকার জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৩, ০২:৫০ পিএম
দিনাজপুরের পিকনিক স্পট স্বপ্নপুরীতে ভ্রমণে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষকসহ একদল শিক্ষার্থী। এতে আহত হয়ে ৯ শিক্ষার্থী দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
রোববার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নবাবগঞ্জ থানায় মামলার পর সোমবার ভোরে হামলার সঙ্গে জড়িত আটজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
চিকিৎসাধীন আহত শিক্ষার্থীরা হলেন— জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন আরাফ, জাহিদুল আলম তালহা, বিনয় কুমার, প্রান্ত, মোকছেদুল, সাকিব, ওমর ফারুক, বিনজন বসাক, মামুন আশিক। অন্যদের নাম এখনো পাওয়া যায়নি। এদের মধ্যে আরাফাত হোসেন আরাফ ও জাহিদুল ইসলাম তালহার অবস্থা গুরুতর।
শিক্ষা সফরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন মাহি সাংবাদিকদের জানান, গত শনিবার বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ৭৩ শিক্ষার্থী ও ১০ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে চার দিনের শিক্ষা সফরে আসেন। তারা জয়পুরহাট জেলায় ড্রিমল্যান্ড আবাসিক হোটেলে উঠেছেন। দ্বিতীয় দিন রোববার দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিসহ বিভিন্ন জায়গায় ক্ষেত্র সমীক্ষার কাজ শেষে বিকাল সাড়ে ৪টায় নবাবগঞ্জ উপজেলার পিকনিক স্পট স্বপ্নপুরীতে আসেন তারা।
সেখান থেকে পৌনে ৬টায় তারা বের হয়ে জয়পুরহাট জেলায় ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। স্বপ্নপুরীতে ঘোড়ার রাইডসে ওঠার সময় খুশবু নামে এক শিক্ষার্থী তার ব্যাগ ছেড়ে আসে। পরে সহপাঠী শ্রেয়শীকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাগ আনতে গেলে ঘোড়ার রাইডসের দায়িত্বে থাকা কর্মচারীর দুর্ব্যবহারের শিকার হন তারা। ওই দুই শিক্ষার্থী অন্য বন্ধুদের জানালে তারা প্রতিবাদ করেন। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে পিকনিক স্পটের কর্মচারীদের দ্বারা মারধরের শিকার হন শিক্ষার্থীরা।
সহযোগী অধ্যাপক মো. মহিউদ্দীন মাহি আরও বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ১০০ গজ দূরে ছিলেন তিনি। ঝগড়া থামাতে এগিয়ে গেলে তিনিও হামলার শিকার হন। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে। এতে অন্তত ১১ শিক্ষার্থী আহত হন বলে জানান তিনি। আহতদের প্রথমে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে গভীর রাতে আহতদের মধ্যে ৯ জনকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মারধরের শিকার শিক্ষার্থী ওমর ফারুক বলেন, পিকনিক স্পটের কর্মচারীরা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। মারমুখী হয়ে তারা আমাদের কোনো কথাই শুনছিল না। বেঞ্চের লোহার রড, চেলা কাঠ, চিকন লোহার রড দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করেছে।
ঘটনার বিষয়ে স্বপ্নপুরীর স্বত্তাধিকারী ও দিনাজপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার পর জানলাম একটি ব্যাগের মালিকানা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কয়েকজন কর্মচারীর বাকবিতণ্ডা হয়েছে। তবে ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত।
তিনি দাবি করেন, এ ঘটনায় তাদেরও ৭-৮ জন কর্মচারী আহত হয়েছেন। দুই পক্ষের আহতদের পুলিশ নিয়ে গেছে। বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
নবাবগঞ্জ থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে নবাবগঞ্জ থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।