Logo
Logo
×

সারাদেশ

পল্লি চিকিৎসক হত্যা ঘটনায় আসামিদের বাড়িঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণত

Icon

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৩, ১০:৫৮ পিএম

পল্লি চিকিৎসক হত্যা ঘটনায় আসামিদের বাড়িঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণত

পল্লি চিকিৎসক হত্যা মামলায় আসামি পক্ষের বাড়িঘর ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। ছবি: যুগান্তর 

কুষ্টিয়ার কুমারখালীর চর জগন্নাথপুর গ্রামে পল্লি চিকিৎসক হত্যা ঘটনায় আসামি পক্ষের বাড়িঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আসামিদের অনেকেই জামিনে মুক্ত হয়ে এলাকায় ফিরে বাড়িঘর হারিয়ে তাঁবু টাঙিয়ে বসবাস করছেন। টিউবওয়েল পর্যন্ত তুলে নিয়ে যাওয়ায় সুপেয় পানির অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

রোববার সরেজমিন দেখা যায়, একতলা ইটের ও আধাপাকা দালান ঘরসহ টিনের ঘর ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। বসত বাড়ির নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র এমনকি প্লাস্টিকের মগ পর্যন্ত লুটপাট করে নিয়ে গেছে।

কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, তারা জামিনে বাড়িতে ফেরার পর পায়রা ও মুরগি পর্যন্ত খুঁজে পাননি। এছাড়াও সবমিলিয়ে প্রায় দেড় কোটি টাকার গরু লুটপাট, ঘরবাড়ি ও মাঠের ফসলসহ ১৫-২০ কোটি টাকার ক্ষতিসাধন করেছে প্রতিপক্ষ।

পল্লি চিকিৎসক রাজ্জাক হত্যা মামলার প্রধান আসামি জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বর্তমান ১নং ওয়ার্ড সদস্য সবুজের বাবা মকবুল বিশ্বাস জানান, আবদুর রাজ্জাক হত্যার ঘটনায় তিনি মামলার আসামি না হলেও প্রাণভয়ে পালিয়ে থেকে প্রায় এক মাস তিন দিন পর গত ৫ মার্চ গ্রামে বাড়ি ফেরেন। গ্রামে ফিরে তার মুদি দোকানসহ বসতবাড়ি  একতলা ভবনের কিছুই খুঁজে পাননি। ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি ভবনের থাই গ্লাসের জানালা ও গ্রিল পর্যন্ত খুলে নিয়ে গেছে প্রতিপক্ষ। শুধু মকবুল বিশ্বাস নন, এ ঘটনায় গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছিল আসামিপক্ষের শতাধিক পরিবার। তাদের দাবি, পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তির প্রতিটি বাড়িতেই ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এসব পরিবার পলিথিন ও ত্রিপল দিয়ে তাঁবু টাঙিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

আসামিপক্ষের ভুক্তভোগীরা জানান, ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেম্বার মো. আবুল কাশেম ও বাদীপক্ষের সমর্থকরা তাদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। মাঠের ফসলও কেটে নিয়ে গেছে। এসব ঘটনায় তারা বাদীপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় চারটি ও আদালতে একটি মামলা করেছেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য মো. আবুল কাশেম বলেন, বাদীপক্ষের লোকজন এলাকায় ভাঙচুর-লুটপাট করেছে। তিনি বা তার লোকজন এ কাজে জড়িত নন। তবুও তিনিসহ তার লোকজন মিথ্যা মামলার আসামি হয়েছেন।

জগন্নাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল বাকী বাদশা বলেন, পুলিশের সামনেই বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। হামলাকারীদের সংখ্যা বেশি হওয়ার ভয়ে পুলিশ প্রতিরোধ করতে পারেনি।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোহসীন হোসাইন বলেন, ঘটনার পর থেকেই এলাকায় পুলিশ পাহারায় রয়েছে। পুলিশ না থাকলে এলাকায় আরও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটত।

উল্লেখ্য, পাওনা তিনশ টাকার জন্য গত ২ ফেব্রুয়ারি সকালে জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য সবুজের সঙ্গে সাবেক মেম্বার জাবেদ আলী বিশ্বাসের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। এতে সাবেক মেম্বারের ভাতিজা পল্লি চিকিৎসক আবদুর রাজ্জাক নিহত হন। এ ঘটনায় ওই রাতেই নিহতের ভাই মো. আক্কাস আলী বিশ্বাস বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় বর্তমান ইউপি সদস্যকে প্রধান করে ২১ জনকে আসামি করা হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম