রাজশাহীতে মুক্তিপণ নিতে গিয়ে তিন অপহরণকারী আটক। ছবি: যুগান্তর
রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার সাগরপাড়া এলাকার এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ নিতে গিয়ে তিন অপহরণকারীকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সকালেই রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এরআগে ঢাকা মহানগর পুলিশের সহায়তায় সোমবার অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে রাজধানী রামপুরার একটি বাড়ি থেকে।
আটকরা হলেন- বাগেরহাটের চিতলমারী থানার কুড়ালতলা গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫), খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার কমিশনার গলি নবপল্লীর মৃত সাহেব আলীর ছেলে জাহিদ হাসান (৩৫) ও ঢাকা মহানগরীর পল্লবী থানার মিরপুর দুয়ারীপাড়ার মৃত নাসিরুদ্দীন মণ্ডলের ছেলে মনোয়ার হোসেন (৬০)।
আরএমপির বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন জানান, গত রোববার রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার সাগরপাড়া এলাকার মাসুদ আলী নামের এক ব্যক্তি জমি-জমা সংক্রান্ত মামলার কাজে ঢাকায় যান। ওইদিন দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার ছেলেকে মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, ঘরের আলমারির চাবিসহ এক ব্যক্তিকে রাজশাহীতে পাঠালাম। তাকে আমার ব্যাংক হিসাবের চেক বইটা দিয়ে দিও। ছেলে মিনহাজ এসব কথার কারণ জানতে চাইলে কোনো প্রতি উত্তর না দিয়ে মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে দেন মাসুদ। মিনহাজের এ বিষয়ে সন্দেহ হয় এবং তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিষয়টি তাৎক্ষণিক জানান। পরস্পর আলোচনার পর ঘটনাটি পুলিশকে জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এরই মধ্যে রোববার রাত আড়াইটার দিকে তিনজন ব্যক্তি একটি প্রাইভেটকার নিয়ে মাসুদের সাগরপাড়ার বাড়ির সামনে গিয়ে তার ছেলের মোবাইলে ফোনে জানান তারা ঢাকা থেকে চেক বই নিতে এসেছেন। তখন তাদের গতিবিধি ও কথাবার্তায় সন্দেহ হলে মিনহাজ বিষয়টি তখনই পুলিশকে জানান। পুলিশের একটি টিম তাৎক্ষণিক সাগরপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মেহেদী হাসান, জাহিদ হাসান ও মনোয়ার হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা মাসুদকে অপহরণের কথা স্বীকার করেন। পুলিশ এসময় তাদের ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি জব্দ করে।
আরএমপির বোয়ালিয়া জোনের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) আরেফিন জুয়েল জানান, পুলিশের একটি টিম অপহৃত মাসুদকে উদ্ধারে আটকদের জিজ্ঞসাবাদ করে। এ সময় তারা পুলিশকে জানায়, মাসুদকে ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে অপহরণ করে রামপুরার একটি বাড়িতে আটক করে রাখে। ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ পেলে মাসুদকে তারা ছেড়ে দিবেন। টাকা না দিলে মাসুদকে প্রাণে মেরে ফেলার পরিকল্পনা ছিল তাদের। সোমবার রাতে আসামিদের দেওয়া তথ্য এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে রাজধানী রামপুরা থানা পুলিশের সহায়তায় মাসুদকে উদ্ধার করা হয়।
মুক্তি পেয়ে মাসুদ সোমবার রাতে রাজশাহীতে পরিবারের কাছে ফিরেন বলে জানান তিনি।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আটকরা অপহরণকারী চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন থেকে নিরীহ মানুষকে আটক রেখে মুক্তিপণ আদায় করে আসছে। সোমবার রাতে তাদের বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি অপহরণ মামলা করা হয়েছে।