সংবাদ প্রকাশের জেরে হামলা: ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২৩, ১১:০৬ পিএম
গাজীপুরে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান খানকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের নামে মামলা হয়েছে।
এলাকার কৃষকদের পক্ষে সংবাদ প্রকাশের জেরে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এ হামলা হয়। এ ঘটনায় কয়েকজন কৃষক আহত হন। আহত কৃষক নূরু খান বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে জয়দেবপুর থানায় মামলা করেন।
মৎস্য খামারের নামে বাঁধ দিয়ে কৃত্রিম জলাবদ্ধতা তৈরির অভিযোগ করে আসছিলেন কৃষকরা। গণমাধ্যমে এ সংবাদ প্রকাশের পর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে বিতর্কিত ওই মৎস্য খামারের বাঁধ পরিদর্শনে যান।
সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সামনেই ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর ওই হামলার ঘটনা ঘটে।
এ সময় একাত্তর টিভি ও দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার ইকবাল আহমদ সরকার, আরটিভির গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার আজহারুল হক ও মানবকণ্ঠ পত্রিকার গাজীপুর প্রতিনিধি শামসুল হক ভুঁইয়া আহত হন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে জেলার সাংবাদিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সাংবাদিকরা ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে অবিলম্বে গ্রেফতার ও বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে মামলা হওয়ার পর এখনো কোনো আসামি গ্রেফতার হয়নি। বরং অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আসামিরা প্রকাশ্যে বীরদর্পে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং মামলার বাদীসহ ভুক্তভোগী কৃষকদের হুমকি দিচ্ছে। এতে মামলার বাদীসহ ভুক্তভোগী কৃষকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
আহত সাংবাদিকরা জানান, গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়ীয়া ইউনিয়নের চিলনী, রোসাদিয়া ও কুমুন এলাকার কৃষকদের বিলের জমি ঘিরে নির্মিত বাঁধ কেটে আবাদি জমি ও খাল অবমুক্ত করার দাবি জানিয়ে গ্রামবাসীদের পক্ষে দুই শতাধিক কৃষকের স্বাক্ষরসহ উপজেলা প্রশাসনে আবেদন জানানো হয়। এ বিষয়ে একাধিক জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।
উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে ঘটনাস্থলে গেলে প্রকাশিত সংবাদের জেরে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে মারধর করা হয়। এ সময় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরাদ আলী ও উপজেলা প্রকল্প পরিচালক কুতুব উদ্দিনও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরাদ আলী বলেন, এ ঘটনায় ফৌজদারি মামলা হয়েছে। আর যখন কোনো জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে মামলা হয়, চার্জশিট না হওয়া পর্যন্ত আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না। চার্জশিট হলে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠি দেওয়া হবে।
আলোচিত বাঁধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেটি একটি রাস্তা হিসেবেই আমার কাছে মনে হয়েছে। তবে একপাশে বাঁধ রয়েছে। তাতে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য আমরা কালভার্ট করে দিতে পারি বলে জানিয়েছি।