সাগরে ডাকাতির ১২ দিন পর দুই জেলের লাশ উদ্ধার, নিখোঁজ ৩
পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২৩, ১০:৪৩ পিএম
বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে যাওয়ার পথে ডাকাতির কবলে পড়া এফবি ভাই ভাই ট্রলারের নিখোঁজ পাঁচ জেলের মধ্যে দুই জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো তিন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী।
উদ্ধারকৃতরা হলেন- ট্রলারের মাঝি কাইয়ুম জোয়াদ্দার ও বাবুর্চি আবুল কালাম। কাইয়ুম জোয়াদ্দার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের চামুপাড়া এলাকার মানিক জোমাদ্দারের ছেলে ও আবুল কালাম বরগুনা সদর উপজেলার রায়েরভোগ ইউনিয়নের মৃত নাজেম হাওলাদারের ছেলে।
এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ জেলেরা হলেন- আব্দুল আলিম (২২), ফরিদ মিয়া (৩০), খায়রুল (২৮)। এদের বাড়ি বরগুনা ও তালতলীতে।
আবুল কালামের ছেলে রুবেল হাওলাদার জানান, বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ ধরে ফিরে আসা জেলেরা জানান গভীর সাগরের সোনার চর এলাকায় পাঁচজনের লাশ ভাসতে দেখা গেছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে গত তিন দিন ধরে সোনার চর ও তার আশপাশের এলাকায় খুঁজতে থাকি। মঙ্গলবার দুপুরে সোনার চর থেকে গভীরে কাইয়ুম জোয়াদ্দারের লাশ পাওয়া যায়। এরপর বুধবার বাইজদ্দার বয়া এলাকায় আমার বাবা আবুল কালামের লাশ ভাসতে দেখে উদ্ধার করি।
১২ দিন পর কিভাবে লাশের পরিচয় শনাক্ত করলেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রুবেল জানান, এ ঘটনায় ফিরে আসা জেলে ইয়াসিন জোমাদ্দার জানিয়েছেন- আমার বাবার ডান হাতে ডাকাতরা কোপ দিয়েছিল। গভীর সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায় ইয়াসিন জোমাদ্দার সেই ক্ষত স্থান বেঁধে দিয়েছিল।
জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, বঙ্গোপসাগরে ডাকাতির ঘটনায় ৯ জেলেকে পিটিয়ে সাগরে ফেলে দেওয়া জেলেদের মধ্যে চার জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও এদের মধ্যে একজন মারা গেছেন। নিখোঁজ অপর পাঁচ জেলের মধ্যে ১২ দিন পর দুই জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ শাহ আলম হাওলাদার জানান, উদ্ধার হওয়া দুই জেলের মরদেহ গভীর বঙ্গোপসাগর থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে। মালিক সমিতির নেতাদের মাধ্যমে মরদেহ দুটি বরগুনা মর্গে নিয়ে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত ২টার দিকে বরগুনার পাথরঘাটা থেকে ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে পায়রাবন্দর থেকে পশ্চিমে বয়া এলাকায় এফবি ভাই ভাই ট্রলারে থাকা ১৮ জেলের মধ্যে ৯ জেলেকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেয়া হয়। এছাড়াও বাকি ৯ জেলেকে জিম্মি করে মালামাল লুটে নেয় দস্যুরা। এর তিন দিন পর নিখোঁজ ৯ জেলের মধ্যে চার জেলেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করলেও চিকিৎসাধীন এক জেলের মৃত্যু হয়। এখন বাকি পাঁচ জেলের মধ্যে দুই জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।