বাগেরহাট জেলার বাদেকাপাড়া গ্রামের ৭ ভাষা সৈনিকের স্মরণে এই প্রথমবারের মতো নানা আয়োজন করা হয়েছে। একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষা সৈনিক ড. হালিমা খাতুনসহ ৭ ভাষা সৈনিকের বাড়ি সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের বাদেকাড়াপাড়া গ্রামে।
নিজ কর্মগুণে বিখ্যাত এ গ্রামেই সাতজন ভাষা সৈনিকের বাড়ি থাকলেও এতদিন বিষয়টি নিয়ে আলাদাভাবে কোনো আয়োজন করেনি কেউ। এ বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ৭ ভাষা সৈনিকের স্মরণে স্থানীয় বাদেকাড়াপাডা পল্লী মঙ্গল সমিতি এ ব্যতিক্রমী আয়োজন করে।
মঙ্গলবার সকালে ভাষা সৈনিকদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন শেষে স্থানীয় শহিদ মিনারে সর্বপ্রথম পুস্পমাল্য অর্পণ করেন ৭ ভাষা সৈনিকের পরিবারের সদস্যরা। পরে স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী শহিদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
বাদেকাড়াপাড়া গ্রামের ৭ ভাষা সৈনিক হলেন, একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষা সৈনিক অধ্যাপক ড. হালিমা খাতুন, সাবেক ছাত্রনেতা শেখ আশরাফ হোসেন, এজেডএম দেলোয়ার হোসেন, শেখ নজিবর রহমান, শেখ মারুফুল হক, শেখ ইজাবুল হক, ভাষা সৈনিক শহিদ বুদ্ধিজীবী শেখ হাবিবুর রহমান। এদের মধ্যে শেখ নজিবর রহমান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহিদ দিবসের তাৎপর্য বিষয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক বুলবুল কবির।
এ সময় কাড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহিতুর রহমান পল্টন, বাগেরহাট সদর হাসপাতালের কর্মকর্তা মোল্লা নজরুল ইসলাম, বাদেকাড়াপাডা পল্লী মঙ্গল সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান বুলু, নারী ইউপি সদস্য আবেদা সুলতানা, ইউপি সদস্য আব্দুল আলিম, ড. হালিমা খাতুনের ভাইয়ের ছেলে তানজির হোসেনসহ এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
পরে শিশুদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা শেষে পুরস্কার দেওয়া হয়।কাড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহিতুর রহমান পল্টন বলেন, ভাষা সৈনিকরা জাতির সূর্য সন্তান। ভাষার জন্য জীবন বাজি রেখেছিলেন তারা। তাদের আন্দোলনের কারণেই আমরা আজ মাতৃভাষায় কথা বলি। তাদেরকে স্মরণীয় করে রাখতেই আমাদের এ আয়োজন। তিনি এ গ্রামের ভাষা সৈনিকসহ দেশের যারা ভাষা সৈনিক রয়েছেন তাদের সবাইকে তালিকাভুক্ত করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের মতো সম্মানিত করার দাবিসহ এ কর্মসূচি ভবিষ্যতে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানান।