জীবনসায়াহ্নে ভাষা সৈনিকের স্বীকৃতি চান নড়াইলের রিজিয়া
শাহীদুল ইসলাম শাহী, নড়াইল
প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০২:৪৬ পিএম
নিভৃতচারী এক ভাষাসৈনিক রিজিয়া খাতুন। এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে চলাচলের সক্ষমতা হারিয়েছেন। জীবনের শেষ সময়টা এখন তার কাটছে বদ্ধ ঘরে। বিছানায় শুয়ে শুয়েই কেটে যায় দিন-রাত্রির পুরো সময়। বিছানায় যেন তার একমাত্র সঙ্গী। জীবনের শেষ সময়ে এসেও এখনো জোটেনি রাষ্ট্রীয় কোনো স্বীকৃতি।
নড়াইলের সদর উপজেলার আলাদাতপুর গ্রামের ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালনকারী প্রায় ৯০ বছর বয়সি রিজিয়া খাতুন দীর্ঘ ৭১ বছরেও নিজ কর্মের স্বীকৃতি পাননি। এখন তিনি জীবনের অন্তিম সময় পার করছেন। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তার চাওয়া, ভাষাসৈনিক হিসাবে সরকারের স্বীকৃতি। কেবল তিনিই নন, তার পরিবারের সদস্যরাও একই দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে।
ভাষাসৈনিক রিজিয়া খাতুনের সঙ্গে দেখা করতে গেলে জীবনের প্রায় শেষপ্রান্তে এসেও অস্পষ্ট ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে ভালো কিছু বোঝা না গেলেও ইশারায় ঠিক বোঝালেন, ওপারের ডাকে সাড়া দেয়ার আগেই তিনি দেখে যেতে চান রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি।
নড়াইল পৌরসভার ডুমুরতলা গ্রামের নুর জালালের মেয়ে রিজিয়া খাতুন বর্তমানে বসবাস করছেন শহরের আলাদাতপুরে। স্বামী মৃত অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক। তাদের চার ছেলে ও এক মেয়ের সংসারে এক ছেলে মারা গেছেন।
জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানের আগে মাসজুড়েই ডাক পেলেও শারীরিক অক্ষমতার কারণে এখন আর কেউ তার খোঁজ রাখেন না। ঢাকার সঙ্গে ২২ ফেব্রুয়ারি নড়াইলেও শুরু হয় ভাষার জন্য আন্দোলন। সে দিনের ভাষা আন্দোলনে যোগ দিতে ছাত্ররা যখন রাস্তায় নামার জন্য ছাত্রীদের আহ্বান জানান তখন সবাই বিভিন্ন অজুহাতে পালিয়ে গেলেও তিনজন যোগ দেন সেই দিনের মিছিলে। তারা হলেন-রিজিয়া খাতুন, সুফিয়া খাতুন ও রুবি। রিজিয়া খাতুনের পুত্রবধূ লাবণী বেগম বলেন, আমার মা ভাষাসৈনিক, এটা আমাদের গর্বের বিষয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সে সময় রাজপথে আন্দোলন করেছেন। মা’র শেষ ইচ্ছা ভাষাসৈনিক হিসাবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। নড়াইল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, আমি এ জেলায় নতুন যোগদান করেছি। এ ভাষাসৈনিকের ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে তার সময়কার কারা কারা তাকে চেনেন সে ব্যাপারে খতিয়ে দেখব।