শরীয়তপুরে হাতকড়া-ডাণ্ডাবেড়ি নিয়ে মায়ের জানাজায় ছাত্রদল নেতা
শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:০১ এএম
শরীয়তপুর সদর উপজেলায় হাতে হাতকড়া আর পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় মায়ের জানাজায় অংশ নিলেন সেলিম রেজা নামে ছাত্রদলের এক কেন্দ্রীয় নেতা। মায়ের মৃত্যুতে কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেলেও জানাজার সময় তার হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি খোলা হয়নি।
রোববার রাত আড়াইটার দিকে শরীয়তপুর সদর উপজেলার সুজন দোয়াল গ্রামে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর পর মসজিদের কবরস্থানে তার মাকে দাফন করা হয়।
মায়ের দাফনের সময় হাতকড়া আর পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি থাকায় খোলা হাত-পায়ে কবরে মাটি দিতে পারেননি তিনি।
ছাত্রদল নেতা সেলিম রেজার পরিবারের সদস্যরা জানান, শরীয়তপুর সদর উপজেলার আনোয়ার হোসেন মুন্সির ছেলে সেলিম রেজা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক। গত ৭ ডিসেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। এর পর ১০ ডিসেম্বর পল্টন থানার নাশকতার একটি মামলায় সেলিম রেজাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি গাজীপুরের কাশিমপুরে কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।
পরিবারের সদস্যরা আরও জানান, রোববার সকালে সেলিম রেজার মা নাছিমা বেগম গ্রামের বাড়িতে মারা যান। এর পর আইনজীবীর মাধ্যমে সেলিম রেজার প্যারোল মুক্তির জন্য ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করা হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেলিম রেজাকে বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে ১০ ঘণ্টার জন্য প্যারোল মুক্তি দেওয়া হয়।
গাজীপুর জেলা পুলিশ সেলিম রেজাকে হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে শরীয়তপুরের সুজন দোয়াল গ্রামে নিয়ে আসেন। সেখানে তার মায়ের মরদেহ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন স্বজনরা। রোববার রাত আড়াইটার দিকে একই এলাকার মসজিদ মাঠে জানাজায় অংশ নেন তিনি। পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা রাত ৩টার দিকে তার মায়ের দাফন করেন। জানাজ ও দাফনের পুরো সময়ে সেলিম রেজাকে হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখে পুলিশ।
শরীয়তপুর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের এক কর্মী শাজাহান মিয়া বলেন, একজন সন্তান রাজনীতি করার অপরাধে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তার মায়ের জানাজায় অংশ নিতে হয়েছে। এর চেয়ে দুঃখের আর কষ্টের কী হতে পারে। মায়ের কবরে মাটিও দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ওসি আক্তার হোসেন বলেন, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্যারোল মুক্তি দেওয়ার পর কারা কর্তৃপক্ষের থেকে পুলিশের জিম্মায় আসামিকে আনতে হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে আসামিকে হাতকড়া পরানো হয়েছিল। গাজীপুর জেলা পুলিশ তাদের জিম্মায় আসামি নিয়ে শরীয়তপুরে আসেন। পালং মডেল থানাপুলিশ তাদের সহায়তা দিয়েছে মাত্র।
সেলিম রেজার ভাই শামীম মুন্সি বলেন, সেলিম ঢাকার দনিয়াতে একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। রাজনীতি করে। ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের আগে গণহারে পুলিশ নেতাকর্মীদের আটক করেছে। সেলিমকেও আটক করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়।