জিকির-আসগারের মধ্য দিয়ে শুরু বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় দিন
মো. জাকির হোসেন ও লুৎফুজ্জামান লিটন, টঙ্গী থেকে
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:১৩ এএম
তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বিদের গুরুত্বপূর্ণ বয়ান ও মুসল্লিদের নফল নামাজ, তাসবিহ তাহলিল এবং জিকির-আসগারের মধ্য দিয়ে শনিবার বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হচ্ছে।
রোববার পূর্বাহ্নে অর্থাৎ বেলা ১১-১২টার মধ্যে যে কোনো একসময় আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হবে।
কাঙ্ক্ষিত আখেরি মোনাজাত কাকরাইল জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা জোবায়ের আহমেদ পরিচালনা করার কথা রয়েছে।
তাবলিগের ছয় উসুলের (মৌলিক বিষয়ে) ওপর শনিবার বাদ ফজর পাকিস্তানের মাওলানা খুরশিদ আলমের বয়ানের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম শুরু হয়।
মুরব্বিদের বয়ান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো ময়দানে নেমে আসে পিনপতন নীরবতা। নিজের ইমান আমলকে মজবুত করার একমাত্র মোক্ষম সময় হৃদয়ে ধারণ করে গভীর মনোযোগ দিয়ে মুরব্বিদের বয়ান শুনছেন।
দ্বিতীয় দিনেও ইজতেমাস্থলে মুসল্লিদের আগমন অব্যাহত রয়েছে। বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষ্যে শিল্পনগরী টঙ্গী এখন ধর্মীয় নগরীতে পরিণত হয়েছে। আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মানুষের এ আগমন ঢল অব্যাহত থাকবে। কাল আখেরি মোনাজাতে বেশ কয়েকজন ভিআইপি অংশগ্রহণ করবেন বলে বিশেষ সূত্রে জানা গেছে।
এবার ইজতেমা ময়দানে যৌতুকবিহীন বিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব ইজতেমার শীর্ষ মুরব্বি প্রকৌশলী মাহফুজ হান্নান।
মুরব্বিদের বয়ান চলাকালে পুরো ইজতেমা ময়দানজুড়ে পিনপতন নীরবতা নেমে আসে। সকালের ঠাণ্ডা বাতাস ও কনকনে শীত উপেক্ষা করে মুসল্লিদের অধিক মনোযোগ সহকারে মুরব্বিদের মূল্যবান বয়ান শুনতে দেখা গেছে।
যারা বয়ান করছেন : বাদ ফজর বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা খুরশিদ আলম। বাদ জোহর বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা ফারুক ওরফে ভাই ফারুক। বাদ আসর বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা জুহাইরুল হাসান।
বাদ মাগরিব বয়ান করবেন, ভারতের মাওলানা ইব্রাহীম দেওলা। তার বয়ান বাংলায় অনুবাদ করবেন হাফেজ মাওলানা জোবায়ের আহমেদ।
মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বয়ান: শুক্রবার বাদ ফজর পাকিস্তানের মাওলানা খুরশিদ আলম ইমান— আমল, আখলাক, জাহান্নাম, জান্নাত ও দাওয়াতে মেহনতের ওপর গুরুত্বপূর্ণ বয়ান করেন।
তিনি তার বয়ানে বলেন, আমাদের আখলাক সুন্দর করতে হবে। জানমাল দ্বীনের দাওয়াতের কাজে ব্যয় করতে হবে। তিনি বলেন, ঘর তৈরি করতে গেলে যে পরিমান মেহনত করা প্রয়োজন, আমরা সে পরিমাণ মেহনত করলে একটি ঘর তৈরি হয়।
ঠিক একইভাবে দাওয়াতের কাজে যে পরিমাণ মেহনত করা প্রয়োজন, সে পরিমাণ মেহনত করলে আল্লাহজাল্লাহ শানহু আমাদের দাওয়াতকে কবুল করবেন। আর দাওয়াত কবুল হলে আমাদের দোয়া কবুল হবে। দোয়া কবুল হলে আমাদের জীবন পরিবর্তন হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, ১৫ জানুয়ারি রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রথমপর্বের (আলমি শুরার) বিশ্ব ইজতেমার সমাপ্তি ঘটবে।
মাঝে চার দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাযের অনুসারী (ওয়াসিফুল ইসলামপন্থি) মুসল্লিরা বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয়পর্বে অংশ নেবেন। ২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে এবারের বিশ্ব ইজতেমার সমাপ্তি ঘটবে।