![গাজীপুরে সোহরাব উদ্দিনের স্মরণসভা](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2023/01/07/image-632577-1673111081.jpg)
গাজীপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক আজকের জনতার সদ্য প্রয়াত সম্পাদক ও গাজীপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সোহরাব উদ্দিনের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার বিকালে নগরীর হাবিব উল্লাহ স্মরণির ইকবাল কুঠির প্রাঙ্গণে এ সভার আয়োজন করে সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুর (জেইউজি)।
স্মরণসভায় বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি দেশকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে সাগর-রুনি দম্পতিসহ অন্তত ৫০ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন। এসব হত্যার কোনো বিচার হয় না। সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের ব্যাপারে সরকারের নীরবতা রহস্যজনক। সাগর-রুনি হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন ৯৫ বার পেছানোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, একটি সভ্য দেশে এটা কল্পনাও করা যায় না।
জেইউজি সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ গাজীপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আসাদুজ্জামান আকাশ ও জেইউজির কোষাধ্যক্ষ এসএম হাবিবের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন- বিশিষ্ট চিকিৎসক ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মাজহারুল আলম, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ গাজীপুর জেলার সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি রাশেদুল হক, গাজীপুর প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মুকুল কুমার মল্লিক, দৈনিক বাংলাভূমির সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজহার, জেইউজির সহ-সভাপতি শেখ আজিজুল হক, গাজীপুর জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাডভোকেট নাছির উদ্দিন, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আতাউর রহমান মোল্লা, অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম মোল্লা প্রমুখ।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ফ্যাসিবাদ দেশকে এমনভাবে আঁকড়ে ধরেছে বিদেশে অবস্থান করেও মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পাওয়া যায় না। দেশের বর্তমান এই অসভ্য শাসন ব্যবস্থায় অনেক কষ্ট নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন সোহরাব উদ্দিন। তিনি বিদেশে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা হয়। এই ভুয়া মামলা নিয়ে পত্র-পত্রিকায় লেখালেখিও হয়। আমরা মনে করেছিলাম এ নোংরা কাজটি যেসব পুলিশ করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেটা তো করেনি উলটো ওই মামলায় সোহরাব ভাইকে জামিন না দিয়ে জেলে পাঠায়। সেখানে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তিনি জামিনে মুক্ত হওয়ার কয়েক দিনের মাথায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেন।
একই সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ডা. মাজহারুল আলম বলেন, মরহুম সোহরাব উদ্দিন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। অন্যায়, অনিয়ম, দুর্নীতির সঙ্গে তিনি কখনই আপস করতেন না। তিনি তার পত্রিকার মাধ্যমে অনেক পেশাদার সাংবাদিক তৈরি করেছেন, যারা দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখছেন।
উল্লেখ্য, সোহরাব উদ্দিন গাজীপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ছিলেন। চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকার কারণে চিকিৎসার জন্য বিদেশে অবস্থানকালেও তাকে গায়েবি মামলার আসামি করা হয়। দেশে ফিরে চিকিৎসার যাবতীয় প্রমাণাদি দেখানোর পরও আদালত জামিন না দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠান। জামিনে মুক্ত হওয়ার সপ্তাহ খানেক পর তিনি স্ট্রোক করেন। ২৩ দিন রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় তিনি মারা যান।