নবাবগঞ্জের ব্রজ নিকেতন প্রায় ৪ দশক পরে দখলমুক্ত দাবি প্রশাসনের!
যুগান্তর প্রতিবেদন, নবাবগঞ্জ
প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:১৬ পিএম
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কলাকোপা ইউনিয়নে অবস্থিত প্রায় দুইশ বছর পূর্বে তৎকালীন জমিদার ব্রজেন রায় ওরফে সুদর্শন রায় কর্তৃক নির্মিত ব্রজ নিকেতন নামের নান্দনিক এ বাড়িটি বাংলাদেশ সরকারের অর্পিত সম্পতি হিসেবে তালিকাভুক্ত বলে নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে।
ইতোমধ্যে বাড়িটির মূল ফটকে সরকারি সম্পতি হিসেবে সাইনবোর্ড লাগিয়ে পুলিশ ও আনসার পাহারায় রাখা হয়েছে।
এদিকে ক্রয়সূত্রে মালিকানা দাবি করেন খন্দকার আবুল কালাম গং। তাদের দাবি প্রায় ৪০ বছর ধরে ক্রয় সম্পত্তি হিসেবে বাড়িটি ভোগদখলে আছেন। হঠাৎ কোনো আইনি নোটিশ বা আদালতের নির্দেশনা ছাড়াই প্রশাসন জোর করে তাদের পরিবারকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে দেয় বলে অভিযোগ করেন। তাদের অভিযোগ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জের ধরেই তাদের এ ধরনের হয়রানি করা হচ্ছে।
উপজেলা ভূমি অফিস সূত্র জানা যায়, ব্রজ নিকেতন নামের বাড়িটি বাংলাদেশ সরকারের অর্পিত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত এবং উপজেলার হযরতপুর মৌজার অর্পিত সম্পত্তি। ভূমি অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে গেজেটভূক্ত রয়েছে। দীর্ঘদিনে একটি মহল জবরদখল করে জজবাড়ি নামে ফলক লাগিয়ে ভোগ করেন।
নবাবগঞ্জ উপজেলা সহকারী (ভূমি) কমিশনার আব্দুল হালিম বলেন, একটি অশুভ চক্র সুদীর্ঘ বছর ধরে পেশিশক্তি ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জমিসহ প্রায় শতকোটি টাকা মূল্যের বাড়ি ও সম্পত্তি দখল করে রাখে। ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, তার সহোদর অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ আবুল হোসেন, আবুল কালাম খন্দকারসহ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা অবৈধভাবে এই ব্রজ নিকেতন দখলে রাখেন। অবশেষে ঢাকা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মমিনুর রহমানের নির্দেশনা মোতাবেক ৩১ ডিসেম্বর ‘ব্রজ নিকেতন’ ভবনটি অবৈধ দখলদার মুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে এই ঐতিহাসিক স্থাপনা ও সম্পত্তি সরকারের দখলে রয়েছে।
এ বিষয়ে আবুল কালাম খন্দকার মোবাইল ফোনে বলেন, আমাদের কোনো নোটিশ না দিয়ে একপ্রকার জোরপূর্বক বাড়িটি থেকে আমাদের বের করে দেওয়া হয়েছে। কোনো আইনকানুনের ধার ধারেননি প্রশাসন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে আমাদের প্রতিপক্ষ বানিয়ে জজবাড়ি থেকে আমাদের পরিবারকে বের করে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, দুইশ বছর আগে নির্মিত ‘ব্রজ নিকেতন’ নামের এ বাড়িটি ঘিরে রয়েছে নানা ইতিহাস ঐতিহ্যের কাহিনী।